‘আমার স্বামীকে কেন মেরে ফেলল?’

প্রহলাদ কুমার দাস
ছবি: সংগৃহীত

বাগেরহাটের কচুয়া থেকে নিখোঁজ ভ্যানচালক প্রহলাদ কুমার দাস ওরফে ভোলার (৪৫) লাশ উদ্ধার হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট সদরের হজরত খানজাহান (রহ.)-এর মাজার দিঘির দক্ষিণ পাড়ে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। ৩০ নভেম্বর কচুয়া থেকে ভ্যানে যাত্রী তুলে বাগেরহাটের দিকে আসার পথে নিখোঁজ হন প্রহলাদ।

পেশায় ভ্যানচালক প্রহলাদ নিখোঁজের ঘটনায় ১ ডিসেম্বর কচুয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর স্ত্রী লিপিকা রানী দাস। নিহত প্রহলাদ বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বাধাল ইউনিয়নের সাংদিয়া গ্রামের পরিতোষ কুমার দাসের ছেলে। দুর্বৃত্তরা তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশটি দিঘিতে ফেলে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে কারা, কেন কীভাবে হত্যা করেছে, তা তদন্ত করছে পুলিশ।

স্ত্রী লিপিকা রানী দাস বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর আমার স্বামী ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। ওই দিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কচুয়ার সাইনবোর্ড এলাকায় তাঁর সঙ্গে আমার মায়ের দেখা হয়। তখন তিনি (প্রহলাদ) জানান, ভাড়া নিয়ে বাগেরহাটে যাচ্ছেন। এর পর রাতে আর ফেরেননি। রাত ১১টার দিকে তাঁর ফোনে কল দিলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর আমার আত্মীয়স্বজনেরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো সন্ধান পাননি। পরে থানায় জিডি করি।’

প্রহলাদের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা ছিল না বলে জানান স্থানীয় লোকজন। কাঁদতে কাঁদতে লিপিকা রানী বলেন, ‘আমার স্বামী খুব সাধারণ মানুষ। ভ্যান চালায়ে সংসার চালাত। কারও সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ নেই। কারা তাঁরে মারল? কেন মেরে ফেলল?’

বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরে হজরত খানজাহান (রহ.)-এর মাজার দিঘিতে একটি লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। পরনের পোশাক দেখে লাশটি পাঁচ দিন আগে কচুয়া থেকে নিখোঁজ ভ্যানচালক প্রহলাদের বলে শনাক্ত করে তাঁর পরিবার। মরদেহের মুখমণ্ডলসহ শরীর ফুলে গেছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে।

পুলিশের ভাষ্য, অন্তত চার-পাঁচ দিন আগে দুর্বৃত্তরা প্রহলাদকে হত্যার পর দিঘিতে ফেলে গেছে। হত্যাকারীরা ভ্যানটি নিয়ে গেছে। এর আগে গত শনিবার কচুয়া থানার ওসি মোহসিন হোসেন বলেছিলেন, প্রহলাদের মুঠোফোন নম্বর ট্র্যাক করে ঢাকার মিরপুরে তাঁর অবস্থান পাওয়া গেছে। মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ রয়েছে। তাঁকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। প্রহলাদ একাধিক এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। তাঁর ঋণের কিস্তি খেলাপি রয়েছে।