ফরিদপুরে শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়, আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড

শিশু ধর্ষণপ্রতীকী ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরে ১০ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের দায়ে তার চাচাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে ফরিদপুরের শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন।

ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত করার জন্য গত মার্চে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে অন্তর্বর্তী সরকার। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে শিশু ধর্ষণের মামলার বিচার আলাদাভাবে করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের বিধান রাখা হয়। ফরিদপুরে এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করার পর এটিই প্রথম রায়।

দণ্ড পাওয়া ব্যক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্যাহগঞ্জ ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির জমিজমা বিক্রি করে দুই লাখ টাকা ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে দেওয়ার জন্য জেলা কালেক্টরকে নির্দেশনা দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। পরে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ মে বিকেলে শিশুটি নিজেদের বাড়িতে ছিল। তখন শিশুটির তিন বছর বয়সী বোনকে পাশের বাড়িতে নিয়ে যান চাচা। পরে শিশুটি বোনকে চাচার বাড়ি থেকে আনতে গেলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন ওই ব্যক্তি। পরে শিশুটি বাড়িতে ফিরে মা-বাবার কাছে সব ঘটনা খুলে বলে। এরপর শিশুটিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে পরদিন ভাঙ্গা থানায় ওই ব্যক্তিকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিচুর রহমান। তিনি ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আজ ওই মামলার রায় দেন আদালত।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম রব্বানী বলেন, মাগুরার আলোচিত শিশু ধর্ষণের ঘটনার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিশু ধর্ষণ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। সেই ট্রাইব্যুনালের অধীন ফরিদপুরে এটিই প্রথম রায়। তিনি বলেন, শিশু ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ দমনে আজকের রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এতে ভবিষ্যতে এ জাতীয় অপরাধ কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।