পা দিয়ে বই লিখলেন যশোরের অদম্য মেধাবী তামান্না আক্তার

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার
ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার। জন্ম থেকেই তাঁর দুই হাত ও একটি পা নেই। তবে শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতা দমিয়ে রাখতে পারেনি তাঁকে। বাঁ পায়ের সাহায্যেই লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন তিনি। সম্প্রতি পা দিয়ে বই লিখে সাড়া ফেলেছেন এই অদম্য মেধাবী। বইয়ের নাম ‘ইচ্ছার আলো’।

বইটিতে জীবনের প্রতিবন্ধকতা জয়ের গল্প বলেছেন তামান্না। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত তাঁর যাত্রার কথাও উঠে এসেছে বইয়ে। তামান্না ফাউন্ডেশন নামে নিজেদের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বইটির এক হাজার কপি প্রকাশ করেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ফেসবুক আইডিতে তামান্না বিষয়টি প্রকাশ করেছেন। তাতেই সাড়া পড়েছে।

তামান্না আক্তারের বইটি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে

তামান্না আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার লেখা প্রথম বই “ইচ্ছার আলো”। অনুপ্রেরণামূলক বইটি লেখা আমার একটি স্বপ্ন ছিল। আমি পাঠকদের জানাতে চেয়েছি, শারীরিক অক্ষমতা কখনো স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারে না। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে যখন বাড়িতে বসে ছিলাম, তখনই বই লেখার পরিকল্পনা করি। আশা করছি শিরগিরই এটি কোনো প্রকাশনী থেকে প্রকাশ করা হবে।’

বইটিতে পা দিয়ে আঁকা বেশ কয়েকটি ছবিও রেখেছেন তামান্না। প্রতিবন্ধীদের জীবন, তাদের সামাজিক সমস্যা, সেগুলোর সমাধান—এসব বিষয় এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। বইটি শুধু প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীদের জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও অনুপ্রেরণা জোগাবে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। বইটি এখন ২০ শতাংশ ছাড়ে ৩০০ টাকা দামে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে।

২০২২ সালের আগস্ট মাসে বইয়ের পাণ্ডুলিপি লেখা শুরু করেন বলে জানান তামান্না। তবে এত দিন টাকার অভাবে বইটি প্রকাশ করতে পারেননি তিনি। লেখাপড়া শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তামান্না। আর সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই তিনি প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী তামান্না এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর প্রথম বই প্রকাশের খবর শুনেছেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে কোনো বাধাই কারও প্রতিভাকে দমিয়ে রাখতে পারে না, সেটাই তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন।