নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারের অব্যাহতিসহ আট দাবিতে কর্মবিরতি চলছে

আট দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলছে। আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরেছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রারকে (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অব্যাহতি দেওয়াসহ আট দফা দাবিতে এবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি পালন করছেন।

এর আগে গত দুই দিন একই দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একই স্থানে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন। তবে জরুরি সেবা, ক্লাস-পরীক্ষায় সহায়তাকারীরা এবং লাইব্রেরি ও পড়ার কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতির আওতামুক্ত ছিলেন।

আরও পড়ুন

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবিগুলো হচ্ছে বর্তমান রেজিস্ট্রারের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) পদ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে (মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন) অব্যাহতি দেওয়া, যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে দ্রুত স্থায়ী পদে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া, কর্মচারীদের সমিতি/ইউনিয়ন অনুমোদন দেওয়া, আগামী সাত দিনের মধ্যে মাস্টাররোল ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং সদ্য স্থায়ী করা কর্মচারীদের আপগ্রেডেশন নিশ্চিতকরণ।

আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে আগামী এক মাসের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতির নীতিমালা সংশোধন করা, তিনটি আপগ্রেডেশনসহ টেকনিক্যাল/নন-টেকনিক্যাল পদে নীতিমালা সংশোধন করা, সহকারী রেজিস্ট্রার/সমমান সপ্তম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেড এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার/সমমান পঞ্চম গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেড করার দাপ্তরিক আদেশ বাস্তবায়ন করা। অনতিবিলম্বে প্রশাসনের বৈষম্যমূলক আচরণ ও দ্বৈতনীতি বন্ধ করতে হবে।

আজ সকাল থেকে কর্মবিরতি চলাকালে বক্তব্য দেন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন, উপ-রেজিস্ট্রার তারেক রাশেদ উদ্দিন, সহকারী রেজিস্ট্রার ইবনে ওয়াজেদসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বক্তারা এ সময় বলেন, আলটিমেটাম অনুসারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি দাবি না মানা হয়, তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ সময় আট দফা দাবির পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী গণস্বাক্ষর দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

কর্মকর্তা কর্মচারীদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. দিদার-উল-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা রেজিস্ট্রারের বিষয়ে কিছু অভিযোগ তুলেছে। আমি তাদের বলেছি সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে দেওয়ার জন্য। সেটি এরই মধ্যে দিয়েছে। আমরা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে ডাকব, তাকে অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করব। এরপর আগামী শনিবারের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে আট দফা দাবির প্রথমটিতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ উল্লেখ নেই। আপগ্রেডেশনসহ অন্য দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জবাবদিহি না থাকার কারণে উঠে এসেছে। আর পুরো আন্দোলনের নেপথ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় পরিসরে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের একটি প্রক্রিয়া। নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে কেউ কেউ আন্দোলনকে কাজে লাগানোর চেষ্টায় ব্যস্ত রয়েছেন।