নারী প্রকল্প কর্মকর্তাকে চেয়ার ছুড়ে মারা যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার মুহাম্মদ শহীদুল ইসলামছবি: পুলিশের সৌজন্যে

চট্টগ্রামের রাউজানে নারী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আয়েশা সিদ্দিকাকে (৩৮) চেয়ার ছুড়ে মারা সেই যুবদল নেতা মুহাম্মদ শহীদুল ইসলামকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে পৌরসভার ফকিরহাট ডিউবিজি শপিং সেন্টারের দোতলার একটি দোকান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গতকাল রাতে ওই ঘটনায় থানায় মামলা করেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা। মামলায় তিনি যুবদল নেতা শহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, তিন মাস ধরে রোজ কয়েকবার করে পিআইও কার্যালয়ে এসে যুবদলের ত্যাগী নেতা পরিচয়ে শহীদ কাজ তাঁকে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। এক মাসে আগে অস্ত্র নিয়ে কার্যালয়ে গেলে পিআইও আয়েশা সিদ্দিকা তাঁকে বের করে দেন। এ সময় আয়েশা সিদ্দিকাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শহীদ। গতকাল বিকেলে আবারও পিআইও কার্যালয়ে এসে কাজের দাবিতে বিরক্ত করছিলেন শহীদ। তখন পিআইও তাঁর চেয়ারে বসা ছিলেন। শহীদকে পিআইও বলেন, কার্যালয়ে এসে বিরক্ত করে কোনো লাভ হবে না, জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ঠিকাদারদের কাজ ও প্রকল্প দেওয়া হয়। এই কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে শহীদ চেয়ার হাতে নিয়ে পিআইওর দিকে ছুড়ে মারেন। সেটি গিয়ে টেবিলের ওপর পড়ে। এতে গ্লাস ও টেবিল ভেঙে যায়। উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ভাঙচুরের শব্দ শুনে দৌড়ে এলে পালিয়ে যান শহীদ।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার শহীদের বিরুদ্ধে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির অপর পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা এবং মারামারির অভিযোগেও মামলা রয়েছে।

যুবদল নেতার হামলার শিকার রাউজানের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা। গতকাল বিকেলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে
ছবি; প্রথম আলো

দলীয় সূত্র জানায়, হামলাকারী শহীদ পৌরসভা যুবদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক। পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ নগর শরীফপাড়ার বাসিন্দা তিনি। জানতে চাইলে রাউজান পৌরসভা যুবদলের সভাপতি শাহাজাহান শাহিল প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কোনো পদ-পদবিতে নেই শহীদুল। তিনি দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করছিলেন। তাঁর সঙ্গে পৌরসভা যুবদলের কোনো সম্পর্ক নেই।

হামলার শিকার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার পর তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। তবে পুলিশ হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করায় এখন কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন।

গ্রেপ্তারের আগে শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দলের ত্যাগী কর্মী। অনেকবার তাঁর কার্যালয়ে গিয়েছি, তিনি আমাকে মূল্যায়ন করেন না। আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় মাথা ঠিক ছিল না। তাই চেয়ার ছুড়ে মেরেছি।’

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, গ্রেপ্তার শহীদুলকে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরেও বিএনপির অন্য পক্ষের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা রয়েছে।