সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার বার্তা দিয়ে নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির হাজারো শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষক ও অতিথিরা শিক্ষার্থীদের আনন্দের সঙ্গে জ্ঞানচর্চা ও পরস্পরের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন।
ম্যানগ্রোভ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের সহযোগিতায় প্রথম আলোর মাসিক ম্যাগাজিন কিশোর আলোর আয়োজনে ‘কিশোর আলো-আলোর ঘণ্টা’ নামে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ইমন হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশের উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা। সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও কিশোর আলো সম্পাদক কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক এবং প্রথম আলোর ডিজিটাল রূপান্তর ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান।
আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, ‘নৈতিকতা ও আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে না পারলে দেশ এগোবে না। আমাদের প্রতিষ্ঠানে এসব নিয়ে আপস করা হয় না বলেই আজ আমরা দেশসেরা অবস্থানে আসতে পেরেছি। আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এখন থেকেই শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত হতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত হতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনুসারী হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন মুনির হাসান। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে বছর জন্মগ্রহণ করেন, সেই বছর আরেকজন বিজ্ঞানী জন্ম নিয়েছিলেন, তাঁর নাম কী? এক শিক্ষার্থী প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের নাম বললে তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে পুরস্কৃত করা হয়। ১৯ বিলিয়ন ডলারের অ্যাপ কোনটি বা মানুষের সঙ্গে পশুপাখির মৌলিক পার্থক্য কী ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নে জমজমাট হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। এ সময় প্রদর্শিত রোবটের তালে তালে কয়েকজন শিক্ষার্থী শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আনিসুল হক বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে ‘এখন’, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন, ‘যিনি সামনে আছেন’ আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ‘যিনি সামনে আছেন তাঁকে সহযোগিতা করা।’ এভাবেই তৈরি হয় দক্ষ মানবসম্পদ। আর দক্ষ মানবসম্পদই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। নিয়মিত কিশোর আলো পড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু পড়াশোনা নিয়ে থাকলে হবে না। ভালো মানুষ হওয়া জরুরি। বই পড়া, গান শোনা, নাটক দেখা ও চিত্রাঙ্কনের মতো সৃজনশীল ও মননশীল কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে হবে। এ সময় মাদক, মিথ্যা ও মুখস্থকে না বলার শপথ করান তিনি। শিক্ষার্থীরাও তাঁর সঙ্গে উচ্চ স্বরে না বলে শপথ নেয়।
সমাবেশে কুইজের তাৎক্ষণিক ও সঠিক জবাব দিয়ে অনেক শিক্ষার্থী জিতে নেয় তাৎক্ষণিক পুরস্কার। এ ছাড়া ১ হাজার ২০০ মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয় কিশোর আলো। সমাবেশের শেষ পর্বে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা একক ও দলীয় সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করে। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ম্যানগ্রোভ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের উপব্যবস্থাপক সানজিদ আহমেদ, প্রথম আলোর সার্কুলেশন বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন রওনক ও উপব্যবস্থাপক রাসেল রানা।
আয়োজন শেষে প্রধান শিক্ষক ইমন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রাণবন্ত এ অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের আরও ভালো করার উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে তিনি মনে করেন। আনিসুল হক ও মুনির হাসান স্যারকে দীর্ঘক্ষণ কাছে পেয়ে আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরাও আনন্দিত। বর্তমান প্রজন্মকে বিজ্ঞানমনস্ক ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে এ ধরনের আয়োজন নিয়মিত হওয়া উচিত।