গাজীপুরে রাস্তায় গাড়ি কম, বাড়িমুখী মানুষ বেশি

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড়ে গাড়ির জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা। আজ সকাল সাড়ে আটটায়ছবি: মাসুদ রানা

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গাজীপুরে মহাসড়কের অবস্থা স্বাভাবিক থাকলেও শেষ মুহূর্তে বাড়িমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে বাসস্ট্যান্ড ও কাউন্টারগুলোতে। আজ রোববার ভোর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় ও মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গাড়ি ও বাড়িমুখী মানুষের বেশ চাপ। তবে সড়কে পর্যাপ্ত যানবাহন না পেয়ে মানুষ ট্রাক ও পিকআপে করে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

মহাসড়কের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা, হাইওয়ে ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ একযোগে কাজ করছে।

হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার কয়েক দফায় পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করায় মহাসড়কের গাজীপুর অংশে যানজট পরিস্থিতি সহনীয় ছিল। গতকাল শনিবার শেষ দফায় পোশাক কারখানা ছুটি হলে বিপুলসংখ্যক ঘরমুখী মানুষ বাসস্ট্যান্ড ও স্টেশনে ভিড় করেন। এ কারণে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও এর আশপাশে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়। তবে অধিকাংশ যাত্রী রাতে চলে যাওয়ায় আজ সকাল থেকে চন্দ্রা মোড় দিয়ে স্বাভাবিক গতিতেই গাড়ি চলছে। তবে যেখানে-সেখানে পার্কিংয়ের কারণে মাঝেমধ্যে জটলা তৈরি হচ্ছে।

এখন বাড়িমুখী যত মানুষ রাস্তায় এসেছেন, সেই পরিমাণ গাড়ি সড়কে নেই। তাদের অনেকে গরুবাহী ফিরতি ট্রাকে ও পিকআপে করে রওনা হচ্ছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তাসহ গাজীপুরের বাসস্টপেজগুলোতে এখন শেষ সময়ে বাড়িমুখী মানুষ অপেক্ষা করে আছেন।

যাত্রীদের অভিযোগ, গাড়ি কম থাকায় পরিবহন-সংশ্লিষ্টরা ভাড়া অনেক বেশি চাইছেন। যাঁরা দিতে পারছেন, তাঁরা চলে যাচ্ছেন। আর যাঁরা বাড়তি ভাড়া দিতে পারছেন না, তাঁরা এমন গরম আবহাওয়ার মধ্যে বাধ্য হয়ে কম টাকায় খোলা ট্রাক, পিকআপভ্যান ও বাসের ছাদে ঝুঁকি নিয়ে রওনা হচ্ছেন।

কোনাবাড়ী এলাকার তুষোকা নামের পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিক আজিজুল ইসলাম। আজ সকালে চন্দ্রায় একটি বাস কাউন্টারের সামনে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, পরিবার নিয়ে তিনি পাবনার চাটমোহর যাবেন। কিন্তু যাওয়ার মতো কোনো বাস পাওয়া যাচ্ছে না। দু-একটা পেলেও তারা ভাড়া বেশি চাচ্ছে। চেষ্টা করছেন একটু কমে যাওয়া যায় কি না।

রাজশাহীর চাপাইর এলাকার বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, আগে যেখানে ভাড়া লাগত ৪০০ টাকা, আজকে ভাড়া চাচ্ছে ৮০০ টাকা। দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে অথচ কেউ তাদের কিছু বলছে না।

দিগন্ত পরিবহনের চালক আসাদুল ইসলাম বলেন, ফেরার সময় কোনো যাত্রী পাওয়া যাবে না। খালি গাড়ি নিয়ে ফিরতে হবে। তাই এখন ভাড়া একটু বেশি নিচ্ছেন তাঁরা।

নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহনের ব্যাপক চাপ ছিল। আজ ভোর থেকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক। তবে চন্দ্রা ও আশপাশের এলাকায় ঘরমুখী মানুষের চাপ আছে।