বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় সহপাঠীর হাতে খুন পলিটেকনিকের ছাত্রী

যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার (১৮) হত্যাকাণ্ডে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার তাঁদের যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নিহত জেসমিন আক্তার ওরফে পিংকি যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তিনি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কাজিরহাট কাওরিয়া গ্রামের জাকির হোসেনের মেয়ে। গতকাল শুক্রবার শার্শা উপজেলার দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামে একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে জেসমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন জেসমিনের সহপাঠী যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আহসান কবির (১৮) ও তাঁর ভাই আহসান রুমেল, মা হোসনে আরা। মামলার অপর আসামি আহসানের বাবা আকবর আলী পলাতক। তাঁদের বাড়ি শার্শা উপজেলার দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামে।

মামলার এজাহার ও র‍্যাব সূত্রে জানা গেছে, জেসমিন ও আহসানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জেসমিন বিয়ের জন্য চাপ দিলে আহসান কৌশলে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে জেসমিনকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন।

২ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন জেসমিন। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি যশোর কোতোয়ালি থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে র‍্যাব-৬–এর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অনুসন্ধানে নামেন র‍্যাবের সদস্যরা। শুক্রবার বিকেলে শার্শার দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামে আকবর আলীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে জেসমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যায় জড়িত সন্দেহে আহসানকে আটক করা হয়। নিহত জেসমিনের ভাই আনিসুর রহমান বাদী হয়ে আহসানসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে শার্শা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। আজ শনিবার সকালে আহসানের ভাই ও মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ সম্পর্কে র‌্যাব-৬–এর যশোরের উপপরিচালক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম নাজিউর রহমান বলেন, জেসমিন ও আহসান সহপাঠী। উভয়ই যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় একপর্যায়ে আহসান কৌশলে জেসমিনকে তাঁর বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। প্রথমে শ্বাস রোধ করে ও পরে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করেন। লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পেছনে সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন। আহসান প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।

নাজিউর রহমান আরও বলেন, ‘জেসমিন নিখোঁজ হওয়ার পর আহসান অন্য একটি সিম দিয়ে জেসমিনের মাকে মুঠোফোনে বলেন, “জেসমিন স্বেচ্ছায় ভারতে চলে গেছে। সে আর ফিরবে না।” র‍্যাব ওই ফোনকলের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে।’

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিকুল ইসলাম বলেন, জেসমিন নিখোঁজ হওয়ার আট দিন পর র‍্যাব সদস্যরা আহসান কবিরের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার করেন। জেসমিনের সহপাঠী আহসানকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে নিহত মেয়েটির ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আহসানের মা ও ভাইকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।