পর্যটক বরণে প্রস্তুত চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগান
ফাইল ছবি

আজ ৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি। এই ছুটি শেষ হওয়ার আগেই এবার ঈদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। এবার দীর্ঘ ছুটি পেয়েছেন চাকরিজীবীরা। এই ছুটি কাজে লাগাতে পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে অনেকেই ছুটছেন দেশের পর্যটন স্থানগুলোতে। আর তাই প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত দেশের অন্যতম পর্যটনপ্রসিদ্ধ স্থান চায়ের রাজধানীখ্যাত শ্রীমঙ্গল।

গত সোমবার উপজেলার বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্ট ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছে হোটেল-রিসোর্টগুলো। রমজান মাস উপলক্ষে প্রায় ফাঁকা থাকায় রিসোর্টগুলোর সুইমিং পুল বন্ধ ছিল। সেগুলো পরিষ্কার করছেন সবাই। দর্শনীয় স্থানগুলোতে লাগানো হচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন, পর্যটকদের স্বাগত জানাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তোরণ বসাচ্ছেন রিসোর্টের মালিকেরা।

ঈদ কিংবা অন্য কোনো লম্বা ছুটি পেলেই প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকেরা ভিড় জমাতে শুরু করেন চায়ের রাজধানীখ্যাত শ্রীমঙ্গলে। চারদিকে সবুজের সমারোহে সজ্জিত সারি সারি চা-বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য মুগ্ধ করে পর্যটকদের।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একটি চা বাগান
ফাইল ছবি

চা–বাগান ছাড়াও বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই), টি মিউজিয়াম, বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, হাইল হাওর, মৎস্য অভয়াশ্রম বাইক্কা বিল, নীলকণ্ঠ সাত রঙের চা কেবিন, চা-কন্যা ভাস্কর্য, বধ্যভূমি-৭১–সহ নানা স্থান ঘুরে দেখেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। শহর থেকে একটু দূরে লাল পাহাড়, শঙ্কর টিলা, গরম টিলা, ভাড়াউড়া লেক, হরিণছড়া গলফ মাঠ, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী পল্লি, সুদৃশ্য জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ ঘুরে দেখেন অনেকেই। পাশাপাশি শ্রীমঙ্গলের পাশের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, পদ্মা লেক পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের শ্রীমঙ্গল শাখার সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ১৩, ১৪ ও ১৫ এপ্রিল সব হোটেল-রিসোর্টে পর্যটকে ভরপুর থাকার সম্ভাবনা আছে। ইতিমধ্যেই এই দিনগুলোর জন্য হোটেল রিসোর্টের রুমগুলো প্রায় বুকিং হয়ে গেছে। এই দিনগুলোর আগে–পরের দিনগুলোতে ভালো বুকিং পাওয়া গেছে। বিদেশি পর্যটকেরা ঈদের আগে ও পরে শ্রীমঙ্গলে ঘোরার জন্য ট্যুর গাইড ও হোটেল রিসোর্টে বুকিং দিয়েছেন। ঈদের সময় বিদেশিরা থাকছেন না।

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সব হোটেল-রিসোর্টে ঈদের জন্য ৬০ শতাংশ পর্যন্ত আগাম বুকিং পেয়েছি। আমরা পর্যটকদের বরণ করে নিতে নানা আয়োজনে হোটেল, রিসোর্ট সাজিয়েছি। পর্যটকেরা প্রতিবছর ঈদের সময় শ্রীমঙ্গলে আসেন। আমরাও পর্যটকদের বরণ করার অপেক্ষা করি। আশা করছি, ঈদে আমাদের সব হোটেল, রিসোর্টে হাউসফুল হবে।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের পরিদর্শক প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে অনেক পর্যটক শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে বেড়াতে আসেন। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা প্রস্তুত আছি।’