বিএনপির মুক্তাদিরের মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক-সমর্থক মুক্তিযোদ্ধা, জুলাই যোদ্ধা ও চা-শ্রমিক

সিলেটে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন সিলেট-১ আসনের বিএনপিদলীয় প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। গতকাল সোমবার বিকেলেছবি: প্রথম আলো

মনোনয়নপত্র দাখিলের চিরচেনা ধারা ভেঙেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের পরিবর্তে বীর মুক্তিযোদ্ধা, জুলাই যোদ্ধা, চা-শ্রমিক, সাংবাদিক, পেশাজীবী ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিদের প্রস্তাবক ও সমর্থক করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁর এমন উদ্যোগের ফলে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সারওয়ার আলমের কাছে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। একই সঙ্গে তাঁর পক্ষে আরও দুই সেট মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয় দুই সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়—আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে।

এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির এর আগে গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তিনি একজন সজ্জন ও সৃজনশীল রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। তাঁর ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক ভাবনা থেকেই প্রস্তাবক ও সমর্থক হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মীদের বাইরে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া দেখা যাচ্ছে।

দলীয় সূত্র জানায়, খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের পক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দুজন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৃথকভাবে তিন সেট মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করা মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক ছিলেন জুলাই যোদ্ধা নাঈম আহমদ চৌধুরী এবং সমর্থক ছিলেন চা-শ্রমিক জয় মাহাত্ম কুর্মি। অন্যদিকে, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মনাফ খান ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী। সমর্থক হিসেবে রাখা হয় প্রবীণ আইনজীবী নোমান মাহমুদ ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি ওয়াজিদা লোদীকে।

এ প্রসঙ্গে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে একটি গণতান্ত্রিক ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়াই বিএনপির লক্ষ্য। সে কারণেই মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক ও সমর্থক নির্বাচনে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে।

সিলেট-১ আসনে খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরসহ মোট ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন জামায়াতে ইসলামীর হাবিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান, এনসিপির এহতেশামুল হক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) প্রণব জ্যোতি পাল, গণ অধিকার পরিষদের আকমল হোসেন, খেলাফত মজলিসের তাজুল ইসলাম হাসান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) সঞ্জয় কান্তি দাস এবং ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের মো. শামীম মিয়া।