সালথায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত

ফরিদপুরের সালথায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের সালথায় এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন বলেন, মাঝারদিয়া গ্রামে এলাকার প্রভাব বিস্তার নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি মো. সাহিদুজ্জামানের বিরোধ চলছিল। স্থানীয়ভাবে সাহিদুজ্জামানের পক্ষের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কবির হোসেন এবং হাবিবুরের পক্ষের নেতৃত্ব দেন তাঁর ছেলে ফারুক হোসেন।

ওই দুই পক্ষের মধ্যে চলমান বিরোধের জের ধরে গতকাল বিকেলে কয়েক শ লোক দেশীয় অস্ত্র ঢাল, কাতরা, ভেলা ও টেঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পুরো এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ। সংঘর্ষ চলাকালে হাবিবুর রহমানের সমর্থক বীর মুক্তিযোদ্ধা রায়হান ব্যাপারী (৬৯) ও আজিজ মোল্লার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-লুটপাট করা হয়। এ সময় রায়হান ব্যাপারীকে মারধর করা হয়। তিনি বর্তমানে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় ৩০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে আহাদ ব্যাপারী (৩২), শাখাওয়াত ব্যাপারী (২৫), মজিদ ব্যাপারী (৩০), আলমগীর ফকির (৩৮), আজিজ মোল্লা (৪৭), বাসার মোল্লাসহ (৫৫) ২০ জনকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা ও নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ফারুক হোসেন বলেন, সাহিদুজ্জামানের উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। গতকাল বিকেলে তাঁর সমর্থক কবির হোসেনের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা রায়হান ব্যাপারীর ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে তাঁর পা জখম করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন।

অপর পক্ষের নেতা ইউপি সদস্য কবির হোসেন বলেন, গতকাল তাঁর সমর্থক মনির, সুমনসহ কয়েকজন মাঝারদিয়া বাজারে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিনা কারণে তাঁদের ইজিবাইক থামিয়ে মারধর করেন ফারুকের লোকজন। এ নিয়ে পরে সংঘর্ষ বেধে যায়।

আজ রোববার বিকেল চারটার দিকে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৭টি শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এ সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।