গাইবান্ধায় কৃতীদের পদচারণে মুখর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানস্থল

সংবর্ধনা নিতে এসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছে কৃতী শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার সকালে গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ। এখানে আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। কুয়াশা ও শীত উপেক্ষা করে সংবর্ধনা নিতে এসেছে জেলার বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীরা।

সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে এবং শিক্ষার ডিজিটাল প্লাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় জিপিএ-৫ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে ফ্রেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।

গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উৎসবে অংশ নিতে জেলার জিপিএ-৫ পাওয়া ১ হাজার ৬৩৫ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করে। কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়ার আগেই মাঠে হাজির হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা আর সেলফি তোলায় মেতে ওঠে তারা। শুরু থেকে মাঠে সুসজ্জিত পাঁচটি বুথ থেকে শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও নাশতা তুলে দিচ্ছেন বন্ধুসভার সদস্যরা।

গাইবান্ধা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে রুকাইয়া হোসেন। সে জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ফুলছড়ি উপজেলার সমিতির বাজার থেকে আরেক কৃতী মায়িশা ফাহমিদার সঙ্গে উৎসবে এসেছে। রুকাইয়া হোসেন বলে, ‘আমি এখন গাইবান্ধা সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছি। অনেক বন্ধু ভর্তি হয়েছে রংপুর ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন কলেজে। উৎসবে এসে অনেক দিন পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলো। এ সাক্ষাতের মজাই অন্য রকম।’

মায়িশা ফাহমিদা জানায়, সে ছোটবেলা থেকেই প্রথম আলো পড়ে। প্রথম আলোর গণিত অলিম্পিয়াড, ফিজিক্স অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নিয়েছে। এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ায় প্রথম আলো থেকে সংবর্ধনা পাওয়া তার জন্য সত্যি অসাধারণ।

নির্দিষ্ট বুথ থেকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ করছে শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো

শহর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে সাঘাটা উপজেলার গঠিয়া গ্রাম। সেখান থেকে সকালে উৎসবে এসেছে মাহবুবা আবিদা সুলতানা। সে আহম্মদ উদ্দিন শাহ শিশু নিকেতন স্কুল ও কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে বলে, ‘এমন উৎসবে আগে কখনো আসিনি। জীবনে প্রথম এ ধরনের বড় অনুষ্ঠানে এলাম। এখানে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, নতুন বছরটি ভালো যাবে।’

শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সোনারায় গ্রাম। সেখান থেকে সংবর্ধনা নিতে আসা রওশন আরা বলে, শীতের সকালে আসতে অনেকটা কষ্ট হয়েছে। কিন্তু অনুষ্ঠানে এসে মনটা ভরে গেছে। জীবনে প্রথম এত মানুষের সামনে সংবর্ধনা পাবে, ভাবতেই সব কষ্ট ভুলে গেছে।

গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার পান্তাপাড়া এলাকা থেকে এসেছে মো. সিজান। সে গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ–৫ পেয়েছে। সিজান জানায়, এখানে এসে মনে হচ্ছে, এটি যেন বন্ধু তৈরির কারখানা। কারণ, এখানে বিভিন্ন এলাকার নতুন নতুন বন্ধুর সঙ্গে পরিচয় হলো। অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হলো।

দিনব্যাপী সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট, প্রথম আলো ই-পেপার (১ মাস) ও চরকির (১৫ দিন) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, শিখোর সৌজন্যে বিনা মূল্যে কোর্স, ফ্রেশ ব্র্যান্ডের স্ন্যাকস বক্স।

শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দিতে উৎসবস্থলে উপস্থিত হয়েছেন প্রথম আলোর উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ গাইবান্ধা আহম্মদ উদ্দিন শাহ শিশু নিকেতন স্কুল ও কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাজহার-উল-মান্নান, গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. খলিলুর রহমান, গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. সাহানা বানু প্রমুখ।