রাউজানে বিএনপির ইফতার অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গোলাগুলি

রাউজানে ইফতার অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনকে নিয়ে যাচ্ছেন নেতা–কর্মীরাপ্রথম আলো

চট্টগ্রামের রাউজানে ইফতার মাহফিল আয়োজন নিয়ে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপির দুটি পক্ষ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কয়েক ঘণ্টা ধরে এই সংঘর্ষ চলে। এতে একজন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল ও একটি অটোরিকশায় আগুন দেওয়া হয়।

আজ বুধবার বিকেল থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত উপজেলার নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের অদুদ চৌধুরী ঈদগাহ মাঠ, ইউসুফ দিঘি পাড় ও গহিরা চৌমুহনী এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির নাম আবদুল কাইয়ুম (২৮)। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী। এ ছাড়া সংঘর্ষে আহত হন গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী মুহাম্মদ সেকান্দর (২৮), তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী অর্জুন কুমার নাথ (৪৭), বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী মুহাম্মদ মোরশেদ আলম (৪০), মুহাম্মদ বাদশা।  এ ঘটনায় আরও ১০ জন আহত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সবার নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলে নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের নোয়াজিশপুর গ্রামের অদুদ চৌধুরী ঈদগাঁ মাঠে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে গোলাম আকবরের অনুসারীরা। বিকেল পাঁচটার দিকে মাহফিল শুরু হলে মোটরসাইকেলে ২০ থেকে ২২ জন লোক এসে মাহফিলে থাকা সবাইকে চলে যেতে বলেন। সেখানে ইফতার মাহফিল হবে না বলে জানান। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ান। একপর্যায়ে গোলাগুলি শুরু হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে ইফতার মাহফিল পণ্ড হয়ে গেলে গোলাম আকবরের অনুসারী নেতা–কর্মীরা পাশের মসজিদে গিয়ে ইফতার সারেন। সন্ধ্যার পর আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের ইউসুফের দিঘি এলাকায় পাঁচটি মোটরসাইকেল ও একটি অটোরিকশায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়
প্রথম আলো

গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী রাউজান উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ইফতার মাহফিল চলার সময় হঠাৎ ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেলে ২০ থেকে ২২ জন লোক এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে যান।

জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ইফতার আয়োজনে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর লোকজন হামলা চালিয়েছেন। তাঁদের পক্ষের লোকজন কাউকে মারধর বা কারও গাড়িতে আগুন দেয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির সদস্য আবু জাফর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নোয়াজিশপুরের পাশের ইউনিয়নের পাশে চিকদাইরে আমাদের দলীয় ইফতার মাহফিল ছিল। সেখানে যাওয়ার পথে গোলাম আকবরের অনুসারীরা আমাদের কর্মীদের মারধর করেন। এ সময় আমাদের কর্মীদের পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন তাঁরা। এ ছাড়া সন্ধ্যায় আমাদের কর্মীদের ওপর আবারও হামলা করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁরা চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি আছেন। ইফতার মাহফিল নিয়ে এসব হানাহানি আমাদের কাম্য নয়।’

রাউজান থানায় কর্তব্যরত উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘থানায় খবর আসার পর পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। বেশ কয়েকজন এ ঘটনায় আহত হয়েছে বলে জেনেছি। পুলিশ থানায় ফিরলে বিস্তারিত জানা যাবে।’