আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সীর বিরুদ্ধে জমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবেছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সীর বিরুদ্ধে সালিসের নামে প্রতারণা করে ভূমি অধিগ্রহণের ৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন।

হানিফ মুন্সী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এবারের উপজেলা নির্বাচনেও তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে হানিফ মুন্সী বলেছেন, নির্বাচনে তাঁকে ঘায়েল করতে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রার্থীরা এসব অভিযোগ তুলছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার চরচারতলা গ্রামের ভুক্তভোগী কুদ্দুছ মিয়ার পরিবারের পক্ষে তাঁর নাতনি জুঁই আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, চরচারতলা মৌজার ৪৪০/৩৩১৮ নম্বর দাগে তাঁদের ১ একর জমি ছিল। আশুগঞ্জ নৌবন্দরের অভ্যন্তরীণ কনটেইনার স্থাপনের জন্য সরকার ওই জমিটি অধিগ্রহণ করে। অবকাঠামোসহ যার অধিগ্রহণ মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৩ টাকা। তাঁরা ওই জমির বৈধ মালিক হলেও উপজেলার মৈশার গ্রামের শাহজাহান মিয়া জাল দলিল ও খতিয়ানের মাধ্যমে অধিগ্রহণের জমি তাঁদের নামে খারিজ করে নেন।

জুঁই আক্তার বলেন, ‘আমার দাদার পরিবার ওই জমির প্রকৃত ওয়ারিশদের কাছ থেকে ক্রয়সূত্রে বৈধ মালিক। দাদার ভাই আলম খাঁ এ নিয়ে আদালতে মামলা করলে অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনে জটিলতা দেখা দেয়। মামলার জন্য কোনো পক্ষই টাকা তুলতে পারছিলেন না। এরপর ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সী ও বিএনপি নেতা জাকির হোসেন দুই পক্ষকে সমঝোতার মাধ্যমে অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলন ও বণ্টন করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাব মেনে মীমাংসার স্বার্থে মামলা তুলে নেয় তাঁদের পরিবার। পরে সমঝোতার অংশ হিসেবে শাহজাহান মিয়ার মাধ্যমে অধিগ্রহণের টাকা তোলা হয়। সেখান থেকে তাঁদের প্রাপ্য ৬ কোটি টাকা হানিফ মুন্সীর কাছে জমা রাখা হয়। বাকি টাকা শাহজাহানসহ অন্যরা নেন।

জুঁই আক্তার অভিযোগ করে বলেন, দাদার ওয়ারিশদের মধ্যে ওই ৬ কোটি টাকা বণ্টন করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হানিফ মুন্সী তিন বছর ধরে টাকা আত্মসাৎ করে রেখেছেন। বারবার ধরনা দিলেও নানা অজুহাতে তাঁদের পরিবারকে হয়রানি করছেন। বিষয়টি এলাকার প্রায় সবাই জানেন।

অভিযোগের বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তাঁকে ঘায়েল করতে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রার্থীরা এসব করছেন।

তৃতীয় ধাপে ২৯ মে আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হানিফ মুন্সী (দোয়াত–কলম) ছাড়াও আরও পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।