যশোরে এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন
যশোরে এক ঘণ্টার ব্যবধানে খুন হওয়া দুই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। দুই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন যশোর সদর উপজেলার ঘুরুলিয়া গ্রামের লতিফ শেখের ছেলে ইউসুফ আলী (২২) ও শহরের পূর্ব বারান্দি নাথপাড়া এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে জিসান উদ্দিন (১৪)। গতকাল শনিবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত শুক্রবার রাতে পারিবারিক বিরোধে ঘুরুলিয়া গ্রামে ছোট ভাই ইউসুফের ছুরিকাঘাতে বড় ভাই ইউনুস (২৪) নিহত হন। এ ছাড়া সিনিয়র–জুনিয়র নিয়ে বিরোধে যশোর শহরের বারান্দি নাথপাড়া এলাকায় নাহিদ হাসান (১৪) নিহত হয়। নাহিদ হাসান সদর উপজেলার তরফ নওয়াপাড়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার ঘুরুলিয়া গ্রামে ইউসুফ আলী এক নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় ওই নারী ইউসুফের বড়ভাই ইউনুসের কাছে বিচার দেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার রাতে ইউনুস ও ইউসুফের স্ত্রী ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। এর জের ধরে ইউসুফ তাঁর বড় ভাই ইউনুসকে ছুরিকাঘাত করেন। স্বজনেরা উদ্ধার করে যশোর হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কোতোয়ালি থানা–পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে গতকাল রাতে সদর উপজেলার নাটুয়াপাড়া এলাকা থেকে ইউসুফকে গ্রেপ্তার করা করে। পরে তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুও উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ওই নারীকে শ্লীলতাহানি নিয়ে বিবাদে ছুরিকাঘাতে বড় ভাইকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
এদিকে শহরের পূর্ব বারান্দি নাথপাড়া বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ইফতারের পর পূর্ব বারান্দি নাথপাড়ার ইব্রাহিম ও রাতুল আল হাসান নামের দুই ছেলের সঙ্গে সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে ঝগড়া হয়। সেই সূত্রে রাতুলের বন্ধু তরফ নওয়াপাড়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে নাহিদ হাসান (১৪) রাতুলের পক্ষ নিয়ে কথা বলে। এ ঘটনার পর তারাবিহ নামাজের মধ্যে নাহিদ হাসানকে মসজিদ থেকে ডেকে নিয়ে যায় ইব্রাহিম ও তাঁর চাচাতো ভাই একই এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে জিসান উদ্দিন (১৪)।
একপর্যায়ে জিসানের হাতে থাকা চাকু দিয়ে নাহিদ হাসানকে জখম করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল মধ্যরাতে পুলিশ শহরের পুরাতন কসবা টালিখোলা এলাকা থেকে জিসান উদ্দিনকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনাস্থলের পাশ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে বিবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।
উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জুয়েল ইমরান, জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুপন কুমার সরকার, যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম।