শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে সিনেট অধিবেশন থেকে বের হয়ে গেলেন আওয়ামীপন্থী ৩ শিক্ষক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন থেকে বের হয়ে গেছেন তিন শিক্ষক। আজ শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

ওই তিন শিক্ষক হলেন নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক মো. শফিক-উর রহমান, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিগার সুলতানা এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক যুগল কৃষ্ণ দাস। তাঁরা সবাই ক্যাম্পাসে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক বলে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে সিনেট অধিবেশনে যোগ দিতে ওই তিন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সিনেট হলে প্রবেশ করেন। বেলা আড়াইটা থেকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বিভিন্ন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী সিনেট ভবনের নিচে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা এই সিনেটে হবে না’, ‘আওয়ামী লীগের দোসররা হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন এবং দেয়ালে বিভিন্ন লেখা সংবলিত পোস্টার সাঁটিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সিনেট হলের ফটকের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে একে একে ওই তিন শিক্ষক বের হয়ে যান। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জাবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব আহসান লাবিব প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামীপন্থী শিক্ষক যাঁরা গত ১৫ বছর স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রেখেছিলেন, যাঁরা জুলাই আন্দোলনে যখন বাংলা বিভাগের এক শিক্ষক শেখ হাসিনার ছবি নামিয়ে ফেলেন তখন নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন, যাঁরা আওয়ামী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, তাঁদের সিনেটে থাকার কোনো অধিকার নেই। এসব আওয়ামী দোসর আজ সিনেট অধিবেশনে যোগ দিতে এসেছিলেন; কিন্তু শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রতিবাদের মুখে তাঁরা বের হয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ওই তিন শিক্ষক সিনেট অধিবেশনে যোগ দিতে এসেছিলেন। শিক্ষার্থীরা তাঁদের উদ্দেশ করে স্লোগান দিলে তাঁরা চলে যান।

অধিবেশন শুরু হতে বিলম্ব

কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে সিনেট অধিবেশন শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বেলা তিনটা থেকে সিনেট অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে মোট ৯৩ জন সিনেট সদস্যের মধ্যে ৩০ জন সদস্য উপস্থিত হলে কোরাম পূর্ণ হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ৩০ জন সিনেটর উপস্থিত না হলে কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় প্রায় এক ঘণ্টা দেরির পর বিকেল চারটার দিকে সিনেট অধিবেশন শুরু করে কর্তৃপক্ষ।