চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় দুই ছেলেকে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধ। গত মঙ্গলবার সকালে ওই ব্যক্তি নিজ বাড়িতে নির্যাতনের শিকার হন।
নির্যাতনের শিকার ও অভিযোগকারী ওই ব্যক্তির নাম আদম আলী (৭২)। তাঁর বাড়ি উপজেলার নওগাঁও গ্রামে। অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন ও মো. হেলাল হোসেন তাঁর বড় ও মেজ ছেলে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধ।
অভিযোগপত্রে আদম আলী উল্লেখ করেন, তাঁর নিজের নামে ৭০০ শতাংশ জায়গা রয়েছে। তাঁর চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর স্ত্রী সাজেদা বেগম (৬৫) দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ছেলেরা কেউই তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। প্রায় এক বছর ধরে তাঁর বড় ছেলে বিল্লাল হোসেন ও মেজ ছেলে মো. হেলাল হোসেন তাঁদের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য নানাভাবে তাঁকে চাপ দিচ্ছেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন।
আদম আলী অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে ওই দুই ছেলে তাঁদের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য তাঁর ওপর চড়াও হন। এতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা দুজনে মিলে তাঁর গলা চেপে ধরেন এবং মারধর করেন। পরে গলার কাছে ছুরি ধরে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ সময় চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন সেখানে এলে মারধর বন্ধ করে চলে যান তাঁরা। এ ঘটনার পর তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানালেও কাজ হয়নি।
আদম আলী আরও বলেন, ঘটনাটির পর থেকে তিনি ও তাঁর স্ত্রী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আপাতত এর বিচার চেয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে থানায় মামলা করবেন। অভিযোগের ব্যাপারে বিল্লাল হোসেন ও মো. হেলাল হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে গতকাল দুপুরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিবার সূত্র জানায়, ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁরা এলাকায় নেই। তাঁদের মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।
ইউএনও রেনু দাস বলেন, ওই বৃদ্ধের কাছ থেকে গত বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। দু-তিন দিনের মধ্যে তাঁর ওই দুই ছেলেকে ডেকে আনবেন। উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যাটির সমাধানের চেষ্টা করবেন। এরপরও যদি ছেলেরা ওই বাবার ওপর নির্যাতন ও হুমকি অব্যাহত রাখেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।