ওয়ার্ড যুবলীগে পদ না পেয়ে জনসমক্ষে দুধ দিয়ে গোসল করলেন তিনি

জনসমক্ষে দুধ দিয়ে গোসলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার খাটিয়ারহাট বাজারে
ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ছানোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তির দুধ দিয়ে গোসলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওয়ার্ড যুবলীগের সম্মেলনে সভাপতির পদ না পেয়ে তিনি জনসমক্ষে দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতি থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেন।

ছানোয়ার হোসেনের বাড়ি উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের তেলিনা গ্রামে। তিনি পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। খাটিয়ারহাট বাজারে তাঁর মুদিদোকান রয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার বিকেলে খাটিয়ারহাট বাজারসংলগ্ন মাঠে ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সম্মেলন হয়। এতে ছানোয়ার হোসেনসহ তিনজন সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীও ছিলেন তিনজন। একাধিক প্রার্থী থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতারা ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এতে রোমান সরকারকে আহ্বায়ক ও সুরুজ আলমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। ছানোয়ার হোসেনকে ১ নম্বর সদস্য হিসেবে রাখা হয়। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হন।

স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছানোয়ার আজ রোববার দুপুরে খাটিয়ারহাট বাজারে জনসমক্ষে দুধ দিয়ে গোসল করেন। কান ধরে উঠবস করেন। একই সঙ্গে তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও দুধ দিয়ে ধুয়ে নেন। যার ভিডিও ধারণ করেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে গোসল করার সময় ছানোয়ারকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আওয়ামী লীগের এই দুর্নীতিগ্রস্ত দল থেকে অব্যাহতি নিলাম। আওয়ামী লীগের কোনো রাজনীতি বা দলের কোনো কার্যক্রমে, কোনো নেতার সঙ্গে থাকব না। আমি কান ধরে উঠবস করছি। আওয়ামী লীগের রাজনীতির কোনো অনুষ্ঠানে যাব না...।’

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে ছানোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজগানা ইউনিয়ন পূর্বাঞ্চলে তাঁরাই একমাত্র আওয়ামী পরিবার হিসেবে পরিচিত। তাঁদের ছাড়া আগে এই অঞ্চলে সক্রিয় আওয়ামী পরিবার ছিল না। এত ত্যাগের পরও পদবঞ্চিত হওয়ায় তিনি দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন।

উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ছানোয়ার হোসেন বিদেশে ছিলেন। দেশে ফিরে তিনি ব্যবসা করেন। এর আগে ছাত্রলীগ বা যুবলীগে তাঁর কোনো পদ ছিল না। কমিটি গঠনের কথা শুনে হঠাৎ তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। সার্বিক বিবেচনায় স্থানীয় নেতারা যা ভালো মনে করেছেন, তা–ই করেছেন। দুধ দিয়ে গোসল আর কান ধরে উঠবস তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। কারও উসকানিতে যুবলীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে তিনি কাজটি করেছেন বলে অভিযোগ করেন আজাহারুল ইসলাম।

আজগানা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ শিকদার বলেন, দলের ত্যাগী নেতাদের পদ দেওয়া হয়েছে। পদবঞ্চিত হয়ে ছানোয়ার হোসেন দুধ দিয়ে গোসল করেছেন। যার ভিডিও ফেসবুকে দেখেছেন। এতে অশালীন কথা রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।