বগুড়ায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই, জনজীবন হাঁসফাঁস

প্রখর রোদের সঙ্গে বেড়েছে তাপপ্রবাহ । তাইতো প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে তোয়ালে মাথায় দিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছেন এক ব্যক্তি। আজ বগুড়া শহরের নওয়াববাড়ী মোড়েছবি: প্রথম আলো

খরতাপে পুড়ছে বগুড়া অঞ্চলের জনপদ। আজ শনিবার বেলা তিনটায় ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এটি জেলায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। আগের দিন শুক্রবার জেলায় সর্বোচ্চ ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অসহনীয় তাপপ্রবাহে মানুষের দৈনন্দিন জীবন বিপর্যস্ত ও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বগুড়া কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বছর জেলায় ৩০ এপ্রিল ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আর বগুড়ার ইতিহাসে ১৯৮৯ সালে ২১ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি তাপ্রপ্রবাহ। আর ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরের তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, বগুড়ায় বর্তমানে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বগুড়া কার্যালয়ের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ আলম জানান, প্রতি মৌসুমে এপ্রিল ও মে মাসে তীব্র তাপপ্রবাহ আসে।

এদিকে তাপপ্রবাহের কারণে প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস উঠছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রাণিকূল। তপ্ত দুপুরে গরম হাওয়ায় ঘরের বাইরে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়েছে। দুপুরের পর শহরের রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। গরম থেকে স্বস্তি পেতে মানুষ ভিড় করছেন বেল, শরবত, তরমুজ, পানীয়, জুস ও  আইসক্রিমের দোকানে। গরমে কষ্ট বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের।

শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কের শরবত ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া জানান, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ আর গরমের কারণে ফুটপাতে শরবতের দোকানে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। প্রতি গ্লাস লেবুর শরবত ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁঠালতলা ২ ননম্বর রেলগেট বাজারের তরমুজের দোকানি শহীদ বলেন, গরমের কারণে তরমুজের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। প্রতি কেজি তরমুজ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিটস্ট্রোকে মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বেশি করে পানি পান ছাড়াও বয়স্ক ও শিশুদের প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।