খুলনা সিটি নির্বাচনে ৩১টির মধ্যে ৩০টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের জয়

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি বর্তমান কাউন্সিলর জয় পাননি। একটি বাদে সব ওয়ার্ডে জিতেছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।

খুলনা সিটিতে ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে। গত নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছিল। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই ছিল বিএনপির প্রার্থী। সেবার কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের ১৩ জন, বিএনপির ৯ জন ও অন্যান্য ৯ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে এবার বিএনপির ৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনজন বর্তমান কাউন্সিলর। বিজয়ীদের কাতারে বিএনপির কোনো প্রার্থীই নেই। এবার ১৬ জন নতুন করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, আর ১৫ জন পুনরায় কাউন্সিলর পদে জয় পেয়েছেন। 

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন দুই আওয়ামী লীগ নেতা। তাঁরা হলেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এস এম খুরশিদ আহম্মেদ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জেড এ মাহমুদ। বাকি ২৯টির মধ্যে ২৮টিতে আওয়ামী লীগ এবং শুধু ১২ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াতের নেতা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ আবদুর রাজ্জাক এবার বিজয়ী হতে পারেননি। ওই ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহাদাত মিনা। ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. সাইফুল ইসলাম হেরে গেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মনিরুজ্জামানের কাছে। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আবদুস সালাম আবারও নির্বাচিত হয়েছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন বিএনপি নেতা মো. কবির হোসেন মোল্লা। ওই ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রব্বানী। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মোহাম্মদ আলী এবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। 

৬ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর শেখ শামসুদ্দিন আহম্মেদ এবারও নির্বাচিত হয়েছেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ হেরেছেন। জয় পেয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শেখ খালিদ আহম্মেদ। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এইচ এম ডালিম হেরেছেন যুবলীগ নেতা সাহিদুর রহমানের কাছে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আবারও বিজয়ী হয়েছেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কাজী তালাত হোসেনের জায়গা দখল করেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. শরীফুল ইসলাম। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মুন্সী আবদুল ওয়াদুদ এবার জিততে পারেননি। জিতেছেন যুবলীগ নেতা মো. নাইমুল ইসলাম। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামানের জায়গা দখল করেছেন শফিকুল ইসলাম।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ মোসারাফ হোসেন এবার নির্বাচন করেননি। এই ওয়ার্ড থেকে বিজয়ী হয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মফিজুর রহমান। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন বর্তমান কাউন্সিলর মো. আমিনুল ইসলাম। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন মো. আনিছুর রহমান বিশ্বাস। এই ওয়ার্ডে জিতেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসান ইফতেখার। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ হাফিজুর রহমান এবারও বিজয়ী হয়েছেন। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. হাফিজুর রহমান নির্বাচন করেননি। ওই ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়েছেন সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগ নেতা এস এম রাজুল হাসান। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন বিএনপি নেতা আশফাকুর রহমান। তিনি দলের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। তবে জিততে পারেননি। ওই ওয়ার্ডে জিতেছেন মহানগর শ্রমিক লীগ নেতা মো. জাকির হোসেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ মো. গাউসুল আযম আবারও নির্বাচিত হয়েছেন। 

২১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. শামসুজ্জামান মিয়া জিততে পারেননি। সেখানে জিতেছেন যুবলীগ নেতা ইমরুল হাসান। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কাজী আবুল কালাম আজাদ, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ইমাম হাসান চৌধুরী, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. আলী আকবর, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. গোলাম মাওলা আবারও জয় পেয়েছেন। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এস এম রফিউদ্দিন আহমেদ। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আজমল আহমেদের জায়গায় জয় পেয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউল হাসান। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকির মো. সাইফুল ইসলাম এবারও জয় পেয়েছেন। 

৩০ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মহানগর আওয়ামী লীগ সদস্য এস এম মোজাফফর রশিদী। ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য আরিফ হোসেন।