যশোরে বিভাগীয় আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে বিশ্ব জয়ের প্রত্যাশা

বেলুন–ফেস্টুন উড়িয়ে আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। আজ শুক্রবার সকালে যশোর জিলা স্কুল মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

যশোরে ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের বিভাগীয় আঞ্চলিক পর্বের অনুষ্ঠান চলছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় যশোর জিলা স্কুল ক্যাম্পাসে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এর আগে যশোর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা, আন্তর্জাতিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ও বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড কমিটির পতাকা উত্তোলন করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, শিক্ষার্থীদের পদার্থবিজ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে ২০১১ সাল থেকে আয়োজিত হচ্ছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। এ অলিম্পিয়াডের আয়োজন করছে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড কমিটি। আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। ব্যবস্থাপনায় রয়েছে প্রথম আলো। অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করছে বন্ধুসভা। এ ছাড়া ম্যাগাজিন পার্টনার হিসেবে আছে কিশোর আলো ও বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা।

উদ্বোধনী পর্বে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘যেকোনো ধরনের জ্ঞান অর্জনের জন্য গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের চর্চা করতেই হবে। কারণ, জ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান। ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের মতো কঠিন বিষয়ে উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথম আলো শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের সোপান রচনা করে দিচ্ছে। এ জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তোমরাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে নেতৃত্ব দরকার, তোমরাই আমাদের সেই নেতা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোলাম দস্তগীর আল কাদেরী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে পদার্থবিজ্ঞানচর্চার বিকল্প নেই। কারণ, পদার্থবিজ্ঞান ছাড়া বিজ্ঞান চলে না।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহাম্মেদ জাহাঙ্গীর বলেন, তোমরা স্বপ্ন দেখো, এটা নিশ্চিত। সেই স্বপ্নটা অনেক দূর এগিয়ে নিতে হবে। শুধু বাংলাদেশ না, তোমাদের সারা বিশ্ব দাপিয়ে বেড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যশোর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দ্র গোস্বামী।

শুধু অনলাইন বাছাইপর্বে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা এই আঞ্চলিক পর্বে অংশ নিয়েছে। অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে জাতীয় অলিম্পিয়াড পর্বে অংশ নেওয়ার জন্য ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের একটি বাছাই পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা শেষে একদিকে খাতা মূল্যায়ন, অন্যদিকে চলে প্রশ্নোত্তর পর্ব।

শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোলাম দস্তগীর আল কাদেরী, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর বাদশা ও একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহাম্মেদ জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

চারটি ক্যাটাগরিতে অন্তত ৪০০ জন শিক্ষার্থী এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে। পরীক্ষার মাধ্যমে এদের মধ্য থেকে জাতীয় অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার জন্যে ৮০ জনকে বাছাই করা হবে। আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে আয়োজিত হবে জাতীয় উৎসব। পরে জাতীয় উৎসবের বিজয়ীদের নিয়ে ক্যাম্প আয়োজন করা হবে। ক্যাম্প শেষে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত হবে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড দল। ওই দলটিই জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠেয় ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।