জাহিদ আহসানের নিজের নামে তিনটি, স্ত্রীর নামে একটি গাড়ি

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল
ফাইল ছবি

গাজীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসানের (রাসেল) গত ১৫ বছরের বেশি সময়ে নগদ অর্থ ও সম্পদ বেড়েছে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তাঁর দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জাহিদ আহসান এবার নিয়ে পঞ্চম দফায় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি পেশা দেখিয়েছেন ব্যবসা ও কৃষি। তবে কৃষি খাত থেকে তাঁর কোনো আয় নেই। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক।

জাহিদ আহসান ২০০৪ সালে উপনির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হন। সেই হিসাবে তিনি ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ওই আসনের সদস্য সদস্য। নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাহিদ আহসানের দাখিল করা হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাহিদ আহসান তাঁর দাখিল করা হলফনামায় ছাত্র ও ব্যবসা হিসাবে পেশা দেখিয়েছিলেন। তখন ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ছিল নগদ ১৫ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা দেখিয়েছিলেন ৭০ হাজার ৭৯৫ টাকা। তখন পৈতৃক সূত্রে ২ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার ৪৯০ টাকা মূল্যের গাড়ি দেখিয়েছিলেন। দায় হিসেবে সুদহীন ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ছিল।

সর্বশেষ হলফনামা অনুযায়ী, জাহিদ আহসানের করমুক্ত একটি এসইউভিসহ নিজ নামে তিনটি এবং তাঁর স্ত্রীর নামে একটি গাড়ি আছে। তাঁর তিনটি গাড়ির দাম ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৩৪ টাকা। আর স্ত্রীর নামে থাকা গাড়ির দাম ১৩ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমা অর্থের পরিমাণ ১৪ লাখ ১৬ হাজার ১৩১ টাকা, স্ত্রীর নামে ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩৪৫ টাকা। প্রতিমন্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া টঙ্গীতে ১ দশমিক ৬৫০ শতাংশ জমি, উত্তরায় তৃতীয় প্রকল্পে ৫ কাঠা জমি। তাঁর স্ত্রীর নামে রাজধানীর বনানীতে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুটি ফ্ল্যাট আছে। ব্যবসায় রাসেলের বাৎসরিক আয় ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা এবং শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত ৯৮ হাজার ৩৯০ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ২৩ লাখ ৭২ হাজার ৮১০ টাকা এবং চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের শেয়ার আছে ৫ লাখ টাকা। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বাৎসরিক সম্মানী ভাতা পান ১৭ লাখ ৯৪ হাজার ৪২০ টাকা এবং বিশেষ সুবিধাদি হিসেবে পান ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৩৮ টাকা। নিজ নামে তাঁর নগদ টাকা আছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বেশির ভাগ সম্পত্তি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া।’

এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়নাল আবেদিনের বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে তাঁর নগদ ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ব্যাংকে জমা ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর নামে ৩৫ ভরি সোনা আছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলিম উদ্দিনের পেশা ব্যবসা। আয়ের উৎস ব্যবসা থেকে আয় ১৫ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি আছে নগদ ২৩ লাখ ১ হাজার ৫৭৫ টাকা। গাড়ি আছে দুটি। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তাঁর অকৃষিজমি আছে ৯৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। গাজীপুর শহরে একটি বাড়ি ও একটি ফ্ল্যাট। ব্যাংক থেকে ঋণ আছে ৫০ লাখ টাকা।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলামের পেশা ব্যবসা। বাড়ি ভাড়া পান ৪ লাখ ৮১ হাজার ৪২৩ টাকা। ব্যবসা থেকে আয় ১৮ লাখ ১০ হাজার। নগদ টাকা আছে নিজের নামে ২০ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১০ লাখ টাকা। ব্যাংকে নিজ নামে আছে ১০ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে আছে ৫০ হাজার টাকা। গাড়ি আছে একটি। তাঁর সাড়ে ৫ একর অকৃষি জমি আছে। স্ত্রীর নামে আছে ৩৫ শতাংশ জমি। তাঁর দোতলা একটি বাড়ি। আছে ৬২টি টিনশেড রুম। ব্যাংকে নিজের নামে ঋণ আছে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ঋণ আছে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।