গণভোট নিয়ে আদেশ জারি করতে হবে প্রধান উপদেষ্টাকে: হাসনাত আবদুল্লাহ

পিরোজপুরে এনসিপির সমন্বয় সভায় যোগদানের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। শুক্রবার সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘অতি দ্রুত গণভোট নিয়ে অর্ডার (আদেশ) হতে হবে। আদেশের আলোচনাটি পাশ কাটিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা চাই, অতি দ্রুত আদেশের বিষয়টি নিষ্পত্তি হোক এবং এই আদেশটি কোনো অধ্যাদেশ নয়, কোনো প্রজ্ঞাপন নয়, অবশ্যই আদেশ হতে হবে। এই আদেশটি আমাদের এই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যিনি প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন, ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে সেই আদেশটি জারি করতে হবে।’

আজ শুক্রবার পিরোজপুরে এনসিপির সমন্বয় সভায় যোগদানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহ এ কথাগুলো বলেন। বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সভা শুরু হয়। পিরোজপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম ও বরিশাল জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাঈদ।

নির্বাচনসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এক-এগারো থেকে শুরু করে ফ্যাসিবাদকালীন পুরো সময়টা বাংলাদেশে একটি গণতন্ত্রহীন সময় অতিক্রান্ত করেছে। আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে এবং এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা এই গণতান্ত্রিক উত্তরণের যাত্রা শুরু করতে পারব। এই যাত্রায় আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারব। তবে নির্বাচন হওয়ার আগে আমাদের কিছু কাজ ছিল। আমরা এই কাজগুলো সম্পন্ন হওয়ার প্রক্রিয়ার একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। সেই পৌঁছানোর একটি যে বিষয়, আপনারা গতকাল থেকে দেখছেন, “হ্যাঁ” “না”-এর বিষয়। অর্থাৎ সংস্কারগুলো মৌলিক সংস্কারগুলোতে একটি প্রস্তাবনা এসেছে। সেই মৌলিক সংস্কারগুলোর পক্ষে যাঁরা আছেন, তাঁরা “হ্যাঁ” বলছেন এবং আর যাঁরা বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাঁরা “না” বলছেন।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিএনপি এবং জামায়াতের সঙ্গে যে দূরত্বের কথা বলছেন, সেটি সত্য নয়। বাংলাদেশে ক্রিয়াশীল যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, তাদের সবার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের ওয়ার্কিং রিলেশন থাকে। আমরা দেখেছি যে বিভিন্ন সময়ে আমরা যে সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছি, সেটির সঙ্গে কখনো জামায়াত একমত হয়েছে, আবার কখনো কখনো তারা অবস্থান পরিবর্তন করেছে। একই জিনিস বিএনপির ক্ষেত্রে হয়েছে। সেই জায়গায় যখন জামায়াত আমাদের সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, তখন মনে হয়েছে জামায়াতের সঙ্গে আমাদের হৃদ্যতা রয়েছে। একই জিনিস বিএনপির ক্ষেত্রেও হয়েছে। বরং সংস্কারের পক্ষে যারা থাকবে, তাদের সঙ্গে আমাদের এনসিপির একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে আর সংস্কারের বিপক্ষে যারা অবস্থান নেবে, এনসিপির সঙ্গে তাদের দূরত্ব তৈরি হবে।’

নির্বাচন কমিশনের প্রতীক সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এখন কোন নীতিমালা দিয়ে শাপলা অন্তর্ভুক্ত করা হয় নাই, তারা (নির্বাচন কমিশন) কিন্তু স্পষ্ট করে নাই। আবার কোন নীতিমালার মধ্য দিয়ে বেগুনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তারা সেটাও স্পষ্ট করে নাই। আবার গতকাল দেখলাম যে তারা শাপলা কলিকে অন্তর্ভুক্ত করছে, এটা আসলে কোন নীতিমালার ভিত্তিতে করছে, সেটা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। সে জন্য আমরা বারবার যেটা ফোকাস করেছি সেটি হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন এভাবে আসলে চলতে পারে না। এটার নীতিমালা থাকতে হবে। মধ্যযুগীয় চিন্তাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নিয়ে এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। সে জন্য আমরা সব সময় ফোকাস করে আসছি, আমরা নির্বাচন কমিশনের নীতিমালাটা দেখতে চাই। যে নীতিমালার ভিত্তিতে তারা মার্কাকে অন্তর্ভুক্ত করে, আবার যে নীতিমালার ভিত্তিতে তারা অন্তর্ভুক্ত করে না। আবার যেই নীতিমালার ভিত্তিতে তারা বাদ দিয়ে দেয়। এই নীতিমালাটা হচ্ছে আমাদের দিতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।’