বাংলাদেশে পালিয়ে এলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সেনা ও বিজিপি সদস্য

ফসলি জমির পরের পাহাড়টি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পড়েছে। যেখানে চলছে তুমুল লড়াই। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তেফাইল ছবি: প্রথম আলো

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের জের ধরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন দেশটির আরও ১৩ জন সেনা ও বিজিপি সদস্য। আজ মঙ্গলবার সকালে ১২ জন এবং দুপুরে একজন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ পালিয়ে আসেন। তাঁরা সবাই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে রয়েছেন।

এ নিয়ে গত তিন দিনে টেকনাফ, উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে ২৯ জন পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্ডার র্গাড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।

শরীফুল ইসলাম বলেন, আজ আসা ১৩ জনের মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশফাঁড়ি সীমান্ত দিয়ে ১ জন, উখিয়ার রেজুপাড়া সীমান্ত দিয়ে ২ জন এবং জমছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১০ জন প্রবেশ করেন। তবে কোন বাহিনীর কত জন সদস্য, তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। অস্ত্র জমা নিয়ে বিজিবি তাঁদের হেফাজতে নিয়েছে। ১৩ জনের সবাই এখন নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের হেফাজতে রয়েছেন।

এর আগে গত ১১ মার্চ আশ্রয় নেন মিয়ানমারের ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনাসদস্য। ৩০ মার্চ আশ্রয় নেন ৩ সেনাসদস্য। সব মিলিয়ে সেনা ও বিজিপির ২০৯ জন নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের হেফাজতে রয়েছেন। আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন দেশটির আরও ৩৩০ জন, যাঁদের ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা দুই মাস ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। লড়াইয়ে ইতিমধ্যে মংডু টাউনশিপের উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব পাশের রাচিডং টাউনশিপসহ ১২টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। কিছুদিন ধরে বুচিডং ও মংডু টাউনশিপ দখলের জন্য শক্তি প্রয়োগ করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। দখলে নেওয়া সীমান্তচৌকি ও পুলিশ ফাঁড়ি পুনরুদ্ধারে সরকারি বাহিনী বিমান হামলা ও শক্তিশালী মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে। সংঘাত দিন দিন নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।

এদিকে গতকাল সোমবার রাত আটটা থেকে রাখাইন রাজ্যে মর্টার শেল, গ্রেনেড বোমার বিস্ফোরণ চলছিল। তা আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ওপারের বিকট শব্দের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের অন্তত ১৩টি গ্রাম।

রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।