‘সেলিম আল দীন তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে অমর হয়ে থাকবেন’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ১৮তম প্রয়াণদিবস পালিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দিনটি উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, নাট্যসংগঠন ঢাকা থিয়েটার, স্বপ্নদল নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘তোমার অসীম মুখশ্রীর পূর্ণিমা শূন্যে আভাময়’ স্লোগান নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের আয়োজনে স্মরণ শোভাযাত্রা হয়। পরে সেলিম আল দীনের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, একজন মানুষ কী করে এতগুলো লেখা, এতগুলো ভাবনাকে তাঁর লেখনীর মধ্যে ধারণ করেন, তা বিস্ময়ের। বাংলা নাটকে ঐতিহ্যনির্ভর আধুনিকতার ধারায় সেলিম আল দীনের অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলার দর্শনের শিকড়ের সন্ধান করতে গেলে, ঐতিহ্যের সন্ধান করতে গেলে আধুনিক বাংলায় যে মানুষগুলোকে খুঁজে পাওয়া যায়, সেলিম আল দীন তাঁদের মধ্যে নেতৃস্থানীয়। এটা আমাদের গর্ব করার জায়গা।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় দিয়ে নিজেরা পরিচিত হই। আর সেলিম আল দীনের নাম যখন আসে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় তখন সম্মানিত হয়। সেলিম আল দীন তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে অমর হয়ে থাকবেন।’
দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে আরও ছিল আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বপ্নীল সোহেলের পরিবেশনায় ‘ভেন্ট্রিলোকুইজম’, ‘যেমন খুশি তেমন করো’ পরিবেশনা ইত্যাদি।
এদিকে বেলা তিনটায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সেটল্যাবে ‘সেলিম আল দীনের নাটক: প্রসঙ্গ ভাষা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে নাটক ‘ধাবমান’ মঞ্চস্থ হয়।
২০০৮ সালের ১৮ জানুয়ারি মারা যান সেলিম আল দীন। নাটকের আঙ্গিক ও ভাষার ওপর গবেষণা করেছেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাটকের বিষয় ও আঙ্গিক নিজ নাটকে প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলা নাটকের আপন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠা তাঁর হাত ধরেই। এই শিকড়সন্ধানী ১৯৮১-৮২ সালে নাট্যনির্দেশক নাসির উদ্দীন ইউসুফকে সঙ্গী করে গড়ে তোলেন গ্রাম থিয়েটার। শুধু নাটক রচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি, বাংলা ভাষার একমাত্র নাট্যবিষয়ক কোষগ্রন্থ বাংলা নাট্যকোষ সংগ্রহ, সংকলন, প্রণয়ন ও সম্পাদনা করেছেন এই গুণী।