মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ছয় বছর পর শেখ হাসিনাসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কুষ্টিয়া মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা দায়ের করেন মাহমুদুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার অস্থায়ী কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া আদালত প্রাঙ্গণে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার অভিযোগে ছয় বছর পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মাহমুদুর রহমান নিজে এজাহার জমা দেন।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মামলা রুজু হয়েছে। মামলায় ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১৫ থেকে ২০ জনকে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া সেই সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া–৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ, জাসদ সভাপতি ও কুষ্টিয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু, সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ও কুষ্টিয়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসানকে পর্যায়ক্রমে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলায় জামিন নিতে যান মাহমুদুর রহমান। জামিন মঞ্জুরের পর তিনি আদালত থেকে বের হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিতে উদ্যোগ নেন। কিন্তু সকাল থেকে আসামিরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড, লাঠি ও অন্যান্য মারাত্মক অস্ত্রসহ কুষ্টিয়া আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন। এ সময় তিনি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পুলিশের কাছে সহযোগিতা চান। কিন্তু পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পুলিশ কোনো সহযোগিতা করেনি।

এজাহারে মাহমুদুর রহমান বলেছেন, বিকেলে একটি প্রাইভেট কারে আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার সময় আসামিরা অস্ত্র, রড, লাঠিসোঁটা ও ইটপাথর দিয়ে গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। গাড়ির সব কাচ ভেদ করে লাঠি ও পাথর দিয়ে তাঁকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। এতে তিনি ঘাড়ের ওপর মাথার পেছনে ডান দিকে ও ডান চোখের নিচে গুরুতর আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত জখম হন। এ ছাড়া লাঠি ও পাথরের আঘাতে দুই হাত ও বুকে আঘাত পান। দৌড়ে এক আইনজীবীর চেম্বারে আশ্রয় নিলে আসামিরা সেখানেও আক্রমণ করেন। এ ঘটনার পর তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় যশোর বিমানবন্দরে গিয়ে এক চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক সেবা নিয়ে ঢাকায় যান।

মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, কুষ্টিয়া মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন, তৎকালীন আদালত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইয়াছির আরাফাত, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।