ঝগড়ার একপর্যায়ে আদালতের বারান্দা থেকে পড়ে হাসপাতালে স্বামী-স্ত্রী

তিনতলার বারান্দা থেকে স্বামী–স্ত্রীর নিচে পড়ে যাওয়ার পর। সোমবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে
ছবি: সংগৃহীত

যৌতুকের মামলায় হাজিরা দিতে এসে কথা-কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে এক দম্পতি তিনতলার বারান্দা থেকে নিচে পড়ে গেছেন। আজ সোমবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটে। পরে আদালতে উপস্থিত লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আহত ব্যক্তিরা হলেন মামুনুর রশিদ (৩৫) ও তাঁর স্ত্রী শিমা খাতুন (২৮)। মামুনুর রশিদ গাংনী উপজেলার শওড়াতলা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে এবং শিমা খাতুন একই উপজেলার রামদেবপুর গ্রামের মালিপাড়ার ফরিদুল ইসলামের মেয়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, একজন কালো বোরকা পরা নারী ও আরেকজন মেরুন রঙের জ্যাকেট পরিহিত পুরুষ আদালত ভবনের তিনতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি শুরু হয়। তাঁরা একে অপরের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। আদালতের বারান্দার রেলিং ছোট হওয়ার কারণে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনে নিচে পড়ে যান। শব্দ শুনে লোকজন ছুটে গিয়ে দেখেন, পুরুষ মানুষটি পা ধরে কাতরাচ্ছেন। নারীটি অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। দ্রুত তাঁদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁরা দুজনই এখন সেখানে চিকিৎসাধীন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত স্বামী–স্ত্রী দুজনেই একে অপরকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।

হাসপাতালে উপস্থিত শিমা খাতুনের ফুুফু প্রথম আলোকে বলেন, মামুনুর ও শিমার বিয়ে হয় ২০১১ সালে। শিমার সন্তান না হওয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে পারিবারিকভাবে কলহ থেকে দুই পক্ষই আদালতে মামলা করে। শিমা গত বছরের জুলাইয়ে আদালতে মামুনুর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের দুটি মামলা করেন। এরপর আদালত মামুনুরকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। আজকে সেই টাকার ২০ হাজার টাকা দিতে এসেছিলেন মামুন।

মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত
ছবি: সংগৃহীত

চেতনা ফেরার পর আহত শিমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, মামুন তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় নিজেকে বাঁচাতে মামুনের হাত ধরে ফেলেন তিনি। এতে দুজনই নিচে পড়ে আহত হন।

আহত মামুনুর রশিদ বলেন, শিমা খাতুন তাঁকে মেরে ফেলার জন্য তিনতলা থেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিতে চাইলে নিজেও পড়ে যান।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নাজমুস সাকিব বলেন, ওই দম্পতিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এক্স-রেসহ কয়েকটি পরীক্ষা করিয়ে আনতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট দেখার পর হাড় ভেঙেছে কি না, নিশ্চিত হওয়া যাবে। আপাতত দুজনই সুস্থ আছেন।