পাবনায় ইন্টার্ন নার্সকে মারধর করলেন দালাল, কর্মবিরতি ডেকে প্রত্যাহার

কর্মবিরতিতে থাকা ইন্টার্ন নার্সদের সঙ্গে আলোচনা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পাবনায় জেনারেল হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে সাদ্দাম হোসেন (৩০) নামের এক দালালের বিরুদ্ধে এক ইন্টার্ন নার্সকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ইন্টার্ন নার্সরা কর্মবিরতি ডেকে পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের ভেতরে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। বেলা দুইটা থেকে নার্সরা কর্মবিরতি ডেকে সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রত্যাহার করে নেন।

মারধরের শিকার ইন্টার্ন নার্সের নাম রাজা হোসেন (২৫)। তিনি শহরের ইছামতি নার্সিং কলেজের ডিপ্লোমা ইন সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি বিষয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ইন্টার্ন করছেন রাজা। এ ঘটনায় পাবনা থানা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্দু বালা প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালের পরিচালককে সঙ্গে নিয়ে নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঘটনার পরপর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি বলে জানান হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক মীর। তিনি বলেন, পরে হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদ বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগে রাজা হোসেন লিখেছেন, তিনি দুপুরে মেডিসিন ওয়ার্ডের মহিলা ইউনিটে দায়িত্বরত ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে ইউনিট থেকে এক রোগী ছাড়পত্র পান। এ সময় রোগীর এক স্বজন সাদ্দাম হোসেন নামের ওই দালালের বিরুদ্ধে একটি ইসিজির বিল ৮০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে রাজা হোসেন ওই দালালের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি রেগে যান। এ সময় রাজা হোসেন ওই দালালকে বাইরে গিয়ে কথা বলতে বলেন। এতে আরও ক্ষেপে গিয়ে রাজাকে নার্সদের কক্ষে নিয়ে গিয়ে মারধর শুরু করেন সাদ্দাম। এ সময় অন্য নার্সরা এগিয়ে এলে তিনি পালিয়ে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন বলেন, ঘটনার পরপরই হাসপাতালে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বেলা দুইটা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্ন নার্সরা। একই সঙ্গে তাঁরা বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্মবিরতিতে থাকা নার্সদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে এ ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেয়। এরপর তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন।

বাংলাদেশ ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট নার্সেস ইউনিয়ন পাবনা শাখার সভাপতি জাহিদ হাসান বলেন, পাবনা জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে দালালের সংখ্যা বেড়ে গেছে। দালালেরা স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় তাঁদের দাপটে হাসপাতালে রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা অসহায়। নার্সরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।

জাহিদ হাসান আরও বলেন, ‘মারধরের ঘটনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আবার কর্মবিরতি শুরু করা হবে।’