‘নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সিদ্ধান্ত নেবেন দেশ কোন দিকে এগোবে’
‘আজ অনেকে সংস্কারের কথা বলে, কিন্তু অতীতের দিকে তাকিয়ে দেখেন, সংস্কারের দলই হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সংস্কার দিয়েই যার যাত্রা শুরু। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র এই দেশে প্রথম যিনি দিয়েছিলেন, তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। জনগণের অধিকার আদায়ের এই ধারাবাহিকতায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া প্রেসিডেনশিয়াল পদ্ধতি থেকে পার্লামেন্ট্রি ফর্ম অব গভর্নমেন্ট করেছিলেন, এটি অত্যন্ত বড় সংস্কার ছিল।’
আজ বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের একটি কনভেনশন হলে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। অতীতে বিএনপির অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আজ নারীশিক্ষায় অগ্রগতি, নারীদের ক্ষমতায়ন প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের। কাজেই সংস্কারে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। বিএনপি জনগণের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে বলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রথা সংবিধানে সন্নিবেশিত করে।
বিএনপি কোনো অবস্থাতেই দলীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করেনি উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন তাঁর বক্তব্যে জানান, বিএনপি সব সময় চিন্তা করেছে দেশের কথা, দেশের মানুষের কথা, জনগণের কথা, সংস্কারের কথা। বিএনপি মানুষের পাশে থাকে। দেশের মানুষকে ফেলে পালিয়ে যায় না। যে দলের নেত্রী অনেক প্রলোভন, অনেক সুযোগ-সুবিধার প্রস্তাব আসার পরও শত বাধাবিপত্তির মুখে বাংলাদেশে থেকেছেন। নিজের অসুস্থতাকে গ্রহণ করেছেন। কোনো ধরনের নতি স্বীকার করেননি। আপস করেননি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম (ময়ুন)। আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আবদুর রহিম রিপনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন ও মিফতাহ সিদ্দিকী এবং বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতারা।
প্রধান অতিথি জাহিদ হোসেন বলেন, সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা, এটিও বিএনপির সংস্কারের ধারাবাহিক কর্মসূচির একটি অংশ। তাই যত দ্রুততার সঙ্গে আগামী দিনে জনগণের অধিকার প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে, জনগণ তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বুঝতে হবে, জনগণের অধিকার জনগণকে ফেরত দেওয়ার জন্য অতিদ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। জনগণ যাকে খুশি তাদের ইচ্ছেমতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই আগামী দিনের সিদ্ধান্ত নেবেন দেশ কোন দিকে এগোবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের নেতাদের উদ্দেশে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে সুন্দর করা যায়, সে জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। যেখানে সুশাসন থাকবে। আইনের শাসন থাকবে। মানবাধিকার থাকবে। জনগণের অধিকার থাকবে। সব ধর্মের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।’
মৌলভীবাজারকে কীভাবে বিএনপির একটি দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলা যায়, দলকে কীভাবে আরও সুসংগঠিত করা যায়, কীভাবে জনগণের আরও দোরগোড়ায় পৌঁছানো যায়, এ বিষয়ে দলীয় নেতা–কর্মীদের নির্দেশনা দেন জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আগামী দিনে জনগণের অধিকার আদায়ের যে সুযোগ আসবে, সেই সময় ৩১ দফার পক্ষে জনগণকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের সমর্থন আদায় করা যায়, সেই লক্ষ্যেই সব ইউনিটের নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। জনগণের দাবি আদায়ের জন্য ঐক্যের বিকল্প কিছু নেই।