ঝোড়ো হাওয়ায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে মেহেরপুর শহরসহ জেলায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আজ সোমবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত ওই অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে সঞ্চালন লাইনে গাছ পড়ে চুয়াডাঙ্গায় আজ ভোরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সকাল নয়টার পর বিভিন্ন এলাকায় পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ এসেছে।

গতকাল রাত ১০টার পর থেকে মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো বাতাস বইতে শুরু করে। রাত ১২টার দিকে বাতাসের গতিবেগ বাড়লে জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আজ বেলা একটা পর্যন্তও বিদ্যুৎ আসেনি।
এ বিষয়ে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপক স্বদেশ কুমার ঘোষ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের হানায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ–সঞ্চালন লাইনের তার কেটে গেছে। বিদ্যুতের পোল হেলে পড়েছে। এগুলো ঠিক না করা পর্যন্ত বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু করা সম্ভব হবে না।’

এদিকে ভারী বর্ষণে কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, ‘গত তিন মাসে তেমন বৃষ্টি হয়নি। এই সময়ে বৃষ্টি হওয়ার ফলে ধান, পাট, আগাম জাতের কপিসহ সব ফসলের জন্য ভালো হলো।’

চুয়াডাঙ্গায় গতকাল বিকেল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। মধ্যরাত থেকে ভারী বর্ষণের সঙ্গে ঝড় বয়ে যায়। স্থানীয় পাওয়ার গ্রিড স্টেশন থেকে সাবস্টেশন পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনে গাছ পড়ে আজ ভোরে চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় আটটি ফিডারের মাধ্যমে। কিন্তু সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় আজ ভোর পাঁচটা থেকে সকাল সোয়া নয়টা পর্যন্ত একটানা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ঘোষ জানান, চুয়াডাঙ্গার জাফরপুরে অবস্থিত গ্রিড সাবস্টেশন থেকে ওজোপাডিকোর সাবস্টেশন সঞ্চালন লাইনের ওপর গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে এবং জাম্পার লুজ হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়েছিল। দ্রুত মেরামত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক তহমিনা নাসরিন বলেন, রোববার বিকেল থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলার ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৪৪ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে গেছে।