বুড়িমারী স্থলবন্দরে ‘কলমবিরতি’ কর্মসূচি, ৪ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

বুড়িমারী স্থলবন্দর সড়কে রপ্তানিযোগ্য মালবোঝাই ট্রাকের সারি। বুধবার দুপুরে স্থলবন্দর এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীদের হয়রানি ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ‘কলমবিরতি’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন এ কর্মসূচি পালন করে। এতে স্থলবন্দর দিয়ে চার ঘণ্টা পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

বুড়িমারী স্থলবন্দর ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি ও নানা ধরনের পণ্য আনা-নেওয়ার কাজ করে থাকেন সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভারত থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের গাড়ির কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীর কক্ষে জমা দেন তাঁরা। এ সময় গোলাম রব্বানী কর্মচারীদের পণ্য ও গাড়ির বহির্গমন পাস বা অনুমতিপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে কর্মচারীরা স্থলবন্দরের কাস্টমসের সহকারী ডেপুটি কমিশনারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে আউট পাস বা বহির্গমনের কাগজ চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে ফাইলগুলো কর্মচারীদের দিকে ছুড়ে মারেন এবং তাঁর কক্ষ থেকে বের করে দেন। এ কারণে মঙ্গলবার বিকেল থেকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত ‘কলমবিরতি’ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। তবে আজ বুধবার সকাল থেকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা আবারও ‘কলমবিরতি’ কর্মসূচি চলাকালে স্থলবন্দর দিয়ে চার ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

এ বিষয়ে কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ফাইল ছুড়ে মারার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বুড়িমারী স্থলবন্দরের গিয়ে দেখা যায়, প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার সড়কজুড়ে রপ্তানিযোগ্য মালবোঝাই ট্রাকের সারি দাঁড়িয়ে আছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আইয়ুব আলী সরকার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছি। এ ধরনের খারাপ আচরণ কোনো সরকারি কর্মকর্তা করেননি। তিনি (গোলাম রব্বানী) কর্মচারীদের দিকে ফাইল ছুড়ে মারেন ও কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে আমাদের লাঞ্ছিত করেছেন। এ কারণে আমরা ‘কলমবিরতি’ কর্মসূচি পালন করেছি।’

কর্মসূচি চলাকালে স্থলবন্দরের কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মজিদুল ইসলাম ও পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে শনিবার আলোচনায় বসে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে কর্মচারীরা ‘কলমবিরতি’ কর্মসূচি তুলে নেন। পরে দেড়টার দিকে স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়।