কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা, ভগ্নিপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ
কেরানীগঞ্জে কাঁচামাল ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর নাম শামীম হোসেন (২৭)। তিনি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা ইউনিয়নের মীরেরবাগ এলাকার বাসিন্দা জজ মিয়ার ছেলে। তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় কাঁচামালের ব্যবসা করতেন।
গতকাল শুক্রবার রাতে শামীম হোসেনকে অপহরণ করা হয়। আজ শনিবার ভোরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরের ভাওয়ার ভিটি এলাকার একটি ঝোপ থেকে শামীমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
শামীমের বড় ভাই বকুল হোসেন বলেন, ‘আমরা দুই ভাই ও পাঁচ বোন। ১৪–১৫ বছর আগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পাইনারচর এলাকার বাসিন্দা শফিক মিয়ার সঙ্গে আমার বড় বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জানতে পারি, দুলাভাই মাদকসেবী ও জুয়াড়ি। শুক্রবার মাদক ও জুয়ার টাকার জন্য আমার বোনকে মারধর করে। এ নিয়ে সন্ধ্যায় এলাকায় সালিস হয়। সেখানে আমার ছোট ভাই শামীম ও তাঁর ছেলে সোহান (১১) গিয়েছিলেন। সালিসে শামীম বোনকে মারধরের প্রতিবাদ করলে দুলাভাই শফিক তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এরপর রাত ১১টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে দুলাভাই শফিকের নেতৃত্বে তার সহযোগী সোহাগ ও আরিফসহ কয়েকজন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় শামীম ও তাঁর ছেলেকে জোর করে তুলে নেয়। কিছু দূর গিয়ে সোহানকে রাস্তায় ফেলে দেয়। সে বাসায় এসে আমাদের ঘটনাটি জানায়।’
ঘটনা জানার পর বকুল হোসেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় যান। তিনি পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা পাননি। তাঁর অভিযোগ, থানায় গিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে বিষয়টি জানালে তিনি রাতে কিছু করতে পারবেন না জানিয়ে পরদিন সকালে আসতে বলেন। বারবার অনুরোধ করলেও সে সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি বলে তাঁর অভিযোগ।
ঘণ্টাখানেক পর অভিযুক্ত শফিক বকুলের মুঠোফোনে কল দিয়ে জানান, শামীম ভাওয়ার ভিটির রাস্তায় পড়ে আছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে দ্রুত সেখান থেকে নিয়ে আসতে বলেন শফিক। সেখানে গিয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে একটি ঝোপের ভেতর ভাইয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন বকুল। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। শামীমের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানান বকুল। তিনি তাঁর ভাইয়ের হত্যার বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ভুক্তভোগী শামীমকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের একটি ভ্রাম্যমাণ দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগটি সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।