এক্স-রে কক্ষে বিষধর শঙ্খিনী, উদ্ধার হলো যেভাবে

এক্স–রে মেশিনের কক্ষ
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক্স-রে কক্ষ থেকে একটি বিষধর শঙ্খিনী সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সদস্যরা গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সাপটিকে উদ্ধার করেন।

হাসপাতালের কর্মীরা বলেন, উপজেলার কালাবিবির দীঘির মোড় এলাকায় অবস্থিত হলি হেলথ হাসপাতালের এক্স-রে কক্ষটি ভবনের নিচতলায়। গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে এক্স-রে করাতে গিয়ে একটি শঙ্খিনী সাপ দেখেন কর্মচারীরা। ওই সময় তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, কীভাবে সাপটি বের করবেন। পরে খবর দেওয়া হলে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সদস্যরা রাত সাড়ে নয়টার দিকে সাপটি উদ্ধার করেন। সাপ উদ্ধারের পর তাঁরা জনগণকে সাপ না মারার জন্য সচেতন করেন।

সাপ উদ্ধারকারী দলের সদস্য মো. মেহরাজ হোসেন বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে ৪ ফুট লম্বা সাপটি উদ্ধার করি। ওই সময় জনগণকেও সচেতন করি সাপ না মারতে।’

হলি হেলথ হাসপাতালের দারোয়ান আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি ওই এক্স-রে কক্ষের পাশে সারা দিন ডিউটি করি। কীভাবে সাপটি কক্ষে ঢুকে গেল, বুঝতে পারিনি। এমন ঘটনা দেখার পর পুরো শরীর ভয়ে শীতল হয়ে যায়।’

আনোয়ারার বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে নিয়ে রাতে হাসপাতালে যাই। ওই সময় দেখি আতঙ্কিত কর্মচারীরা এদিক–ওদিক ছোটাছুটি করছেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে সাপটি মারতে না দিয়ে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশকে খবর দিই। পরে তারা এসে সাপটি উদ্ধার করে।’

সাপের পাশাপাশি প্রকৃতি ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ এবং পাচার রোধে ২০২০ সালে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ (এসআরটিবি) নামে অনলাইনভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করেন সিদ্দিকুর রহমান (রাব্বি)। এর অধিকাংশ সদস্যই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বর্তমানে সারা দেশে ৫০ জন সাপ উদ্ধারকারী সক্রিয় সদস্য আছেন। সংগঠনটি পরিচালনা করতে ১০ সদস্যের কমিটি করা হয় দুই বছর পরপর। বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে আছেন রাজু আহমেদ। গত চার বছরে দুই হাজারের বেশি সাপ উদ্ধারের দাবি করেছেন তাঁরা।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সাপ প্রকৃতির বন্ধু। তাই বিষধর কিংবা নির্বিষ যেকোনো সাপ বসতবাড়ি কিংবা যেকোনো স্থানে জনবসতিতে ঢুকে পড়ার খবর পেলে তাঁরা সেগুলো উদ্ধার করেন। এরপর সেগুলো প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুরো কাজটি তাঁরা স্বেচ্ছাশ্রমে করেন।