শেষ লড়াইয়ে মুখোমুখি হওয়ার এখনই সময়: শামসুজ্জামান দুদু
ঢাকায় ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় বিএনপির মহাসমাবেশে অংশ নিতে ইচ্ছুক নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘এ সমাবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই শহরে (ঢাকা) যারা যাবে, তাদের লড়াইটার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তাদের দুই দিন না খেয়ে থাকতে হতে পারে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পারে। শেষ লড়াইয়ে মুখোমুখি হওয়ার এখনই সময়।’
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি আয়োজিত কর্মিসভায় শামসুজ্জামান দুদু এসব কথা বলেন। আজ বুধবার দুপুরে শহরের আলফা মোড়ে একটি মিলনায়তনে এই কর্মিসভায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ২৮ অক্টোবর দলটির ঢাকায় মহাসমাবেশ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ যাঁরা যেতে পারবেন না, তাঁরা এ শহরে থাকবেন। চুয়াডাঙ্গার মানুষ চুয়াডাঙ্গায়, কুষ্টিয়ার লোক কুষ্টিয়ায়, যশোরের লোক যশোরে। ঢাকার অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া দেখানো হতে পারে। সব যদি ঢাকায় চলে যায়, তাহলে এখানে কাজ করবে কে। তাই দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সামর্থ্যবানেরা শুকনা খাবার পকেটে ঝুলায় নেবেন। প্রয়োজনে একটি লুঙ্গি থাকবে, একটা গামছা থাকবে। এই কাফেলা মুক্তির কাফেলা। এই মানসিকতা নিয়ে সামনের দিকে যেতে হবে।’
বক্তব্যের একপর্যায়ে শামসুজ্জামান বলেন, দেশবাসী, সাংবাদিক ও নেতা-কর্মীরা ২৮ অক্টোবরের পর কী হবে, তা জানতে চাচ্ছেন। এরপর তিনি বলেন, ‘২৮ তারিখের পর হরতাল হবে না, এ কথা আমরা বলি নাই। অবরোধ হবে না, এ কথা আমরা বলি নাই। অসহযোগ হবে না, এ কথা বলি নাই। রাস্তা বন্ধ হবে না, এ কথা আমরা বলি নাই। হবেই, এ কথাও আমরা বলছি না। কিন্তু হবে না, এটাও আমরা বলছি না।’
এই দেশ গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, মানুষের অধিকারের জন্য সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে কারও নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা আরও বলেন, ‘আপনি অধিকার কেড়ে নেবেন, ভোট দিতে দেবেন না। বেগম জিয়াকে আপনি একেবারে মৃত অবস্থার মতো কঠিন জায়গায় ঠেলে দেবেন, চিকিৎসা দেবেন না। বাংলাদেশের মানুষ এটা মেনে নেবে? এটা কী ভাবা যায়? তাঁকে মুক্ত করতে হবে। প্রয়োজন হলে জেল ভেঙে, কারাগার ভেঙে আমাদের নেতা–কর্মী যারা জেলে আছে, যদি আদালত মুক্তি না দেয়, তাহলে আমরা কারাগার ভেঙে আমাদের নেতা–কর্মীদের মুক্ত করব। জেলের তালা ভাঙব, খালেদা জিয়াকে আনব—স্লোগান এটা হবে। এটা চূড়ান্ত লড়াই। এই লড়াইয়ের জন্য তৈরি হতে হবে।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, ‘বন্ধুরা অনেক হয়েছে। শেষ আঘাতটা, শেষ লড়াইটা, শেষ প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবার এখনই সময়। এটাই বার্তা। দ্রুত এই বার্তা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা ও জেলায় দেন। ২৮ অক্টোবরের পরও ঘটনা আছে। সেই ঘটনাগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। জায়গা তিনটা। বাসা, রাজপথ ও জেলখানা—এই তিনটা জায়গা মাথার মধ্যে নেন।’
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দীনের পরিচালনায় ওই কর্মিসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমী। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠানিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ। এ ছাড়া ওই সভায় জেলা ও উপজেলা বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।