যশোরের রাজারহাটে ২৪ ঘণ্টায় কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনা

মোকামে বিভিন্ন আড়তে শ্রমিকেরা কাঁচা চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের কাজ করছেন। আড়তের ভেতরে লবণ মাখানো গরু ও ছাগলের চামড়া স্তূপ করে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। আজ শুক্রবার দুপুরে যশোরের রাজারহাট চামড়ার মোকামেছবি: প্রথম আলো

ঈদের দিন দুপুর থেকে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরের রাজারহাট মোকামে কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার প্রথম হাটের দিনে এই বেচাকেনা কয়েক গুণ ছাড়িয়ে যাবে বলে ব্যবসায়ীদের আশা। তবে প্রান্তিক পর্যায়ের মৌসুমি ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা এবারও চামড়ার ন্যায্য দাম না পেয়ে হতাশ হয়েছেন।

আজ শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে চামড়ার মোকামে দেখা গেছে, ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা হাটে চামড়া নিয়ে এসেছেন। সেসব চামড়া তাঁরা আড়তদারদের কাছে বিক্রি করছেন। মোকামের বিভিন্ন আড়তে শ্রমিকেরা কাঁচা চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের কাজ করছেন। আড়তের ভেতরে লবণ মাখানো গরু ও ছাগলের চামড়া স্তূপ করে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে।

ফড়িয়া ব্যবসায়ী মো. ওয়াসিম বলেন, ‘ঈদের দিন গ্রাম থেকে ১৫টি গরুর চামড়া কিনে বিক্রি করেছি। ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম কম পেলাম। যে দামে কেনা সেই দামেই বিক্রি করতে হয়েছে। শ্রমের দাম ওঠেনি। আড়তদারেরা কম দামে চামড়া কিনে সংরক্ষণ করছেন।’

আড়তদার গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘ঈদের দিন দুপুর থেকে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তিন হাজার গরুর চামড়া কিনেছি। মানভেদে ২০০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে চামড়া কিনেছি। ৩০ ফুটের একটি গরুর চামড়া সংরক্ষণ করতে ৫ কেজি লবণ লাগে। এ বছর লবণের দাম বেশি। সংরক্ষণ খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে। ট্যানারির মালিকেরা তো বেশি দাম দেবে না। যে কারণে বেশি দামে চামড়া কেনাও যাচ্ছে না।’

বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন মুকুল বলেন, ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে সারা রাত বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া মোকামে আসে। আজ দুপুর পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার গরু ও ৩০ হাজার ছাগলের চামড়া এসেছে, যা কোটি টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার প্রথম হাটের দিনে ভালো দামে চামড়া কেনাবেচা হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি।

আগামীকাল শনিবার ঈদের পরে রাজারহাটে প্রথম হাটের দিন। এদিন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চামড়ার ব্যাপারীরা হাটে আসেন। তখন চামড়ার দাম বাড়তে পারে বলে আশা প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর ৭০ কেজি ওজনের এক বস্তা লবণের দাম ছিল ১ হাজার টাকা। সেই লবণ এ বছর ১ হাজার ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে। এতে সংরক্ষণ খরচ বেড়েছে।