সড়ক পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নৌকায় ভোট চাইলেন সংসদ সদস্যের ছেলে

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামে পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন শাইখ আল জাহান। রোববার সন্ধ্যায়
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মতবিনিময় সভা করে ভোট চাইলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আ ক ম সরওয়ার জাহানের ছেলে শাইখ আল জাহান। রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামে পথসভায় তিনি পাকা সড়ক নির্মাণের কথা বলে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেন।

শাইখ আল জাহান জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বাবা সরওয়ার জাহান এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে রাতে জানতে চাইলে শাইখ আল জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা তো সবার সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছিল। এটা (আচরণবিধি ভঙ্গ করে ভোট চাওয়ার বিষয়টি) যদি বলি তবে একটু সমস্যাই।’

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা-২০০৮ অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা দল মনোনীত ব্যক্তি বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ আগে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না।

শাইখ আল জাহান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমি ছোট মানুষ হলেও যেসব জায়গায় গিয়েছি। আমি দেখেছি ৩০ বছর, ৫০ বছর ধরে রাস্তা হয়নি। সেসব জায়গায় আমি বলেছি, এ রাস্তা যদি না হয় আমি আর আসব না। সেসব জায়গাতেই রাস্তা হয়েছে। এ নারায়ণপুর গ্রামে আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি, যদি নির্বাচনে জিততে পারি, যদি আওয়ামী লীগ জিততে পারে, যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তাহলে রিফাইতপুর ইউনিয়নে এই নারায়ণপুরে সর্বপ্রথম রাস্তা হবে। ...এই রাস্তার সমস্যা আর থাকবে না, এই কথা দিয়ে যাচ্ছি।’ এ সময় উপস্থিত শতাধিক সাধারণ মানুষ হাততালি দেন এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, শাইখ আল জাহান বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক চিত্র তুলে ধরে অন্তত ১০ মিনিট বক্তব্য দেন। তাঁর বক্তব্য অনেকে মুঠোফোনে ভিডিও চিত্র ধারণ ও কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ প্রচার করেন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওবায়দুল্লাহকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। এ জন্য তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা বলেন, প্রতীক বরাদ্দের আগে ভোট চাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ এটা করে থাকেন তাহলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।