চট্টগ্রাম নগরের রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর ১১ টুকরা করেছিলেন স্বামী মো. সুমন আলী। এরপর ঘরের বিভিন্ন জায়গায় এসব টুকরা ছড়িয়ে দেন। সবাই টের পেয়ে যাওয়ার পর ফ্ল্যাটের গ্রিল ভেঙে ১০ তলা থেকে পালিয়ে যান তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানাধীন ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
নগরের চান্দগাঁও এলাকায় র্যাব–৭–এর মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বলা হয়, ৯ জুলাই রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন রৌফাবাদ পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ফ্ল্যাটে ফাতেমা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন স্বামী মো. সুমন আলী। সেদিন রাতে বাসা থেকে অস্বাভাবিক শব্দ আসতে থাকে। নিরাপত্তাকর্মী মশিউর রহমান শব্দ শুনে ওই ফ্ল্যাটে যান। ৩০ মিনিট পর দরজা খোলেন মো. সুমন আলী। পরে অস্বাভাবিক নড়াচড়া ও পানির শব্দের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে এলোমেলো কথা বলতে থাকেন তিনি।
র্যাব জানায়, নিরাপত্তাকর্মী মশিউর রহমান জোর করে সুমনের বাসায় ঢুকে কক্ষের বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ, শৌচাগারের ভেতরে রক্তমাখা কাপড় ও কমোডে শরীরের টুকরা অংশ দেখতে পান। এরপর ফ্ল্যাটের দরজায় কোনোভাবে তালা ঝুলিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকতে নিচে যান। এর মধ্যেই সুমন বাসার গ্রিল ভেঙে কৌশলে নিচে নেমে পালিয়ে যান। গতকাল শুক্রবার রাতে র্যাব–৭ চট্টগ্রাম, র্যাব–৯ সিলেট ও র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা অভিযান চালিয়ে সুমনকে গ্রেপ্তার করে।
মো. সুমন আলী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানিয়েছে, তাঁর বাড়ি কুমিল্লার সদর দক্ষিণের সুয়াগাজী গ্রামে। তাঁর বাবার নাম সুন্দর আলী। ১০ বছর আগে ফাতেমা বেগমের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পরবর্তী সময়ে সুমন কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি আরবে যান। গত বছরের জুনে দেশে ফিরে একটি পিকআপ গাড়ি চালাতে শুরু করেন। দেশে ফেরার পর প্রায় সময় স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হতো। ৯ জুলাই রাতেও ঝগড়া হয়। বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাঁর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যায় তিনি দুটি চাকু ব্যবহার করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব–৭–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান। তিনি জানান, এ ঘটনায় নিহত ফাতেমা বেগমের বড় ভাই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার বায়েজিদ থানায় মামলা করেন। আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।