হত্যা মামলার আসামির জামিন না হওয়ায় সংঘর্ষ, আহত ২০

সংঘর্ষ
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার খাঁটিহাতা গ্রামে হত্যা মামলার এক আসামির জামিন না হওয়াকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।

পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন নূর আলম (৩০), ইউনুস মিয়া (৩৫), সুমন মিয়া (২৬) ও তাঁর বড় ভাই কালু মিয়া (৩০)। তাঁদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের ১৭ অক্টোবর খাঁটিহাতা গ্রামের শরাফত আলীর ছেলে সাব্বির মিয়াকে (৯) অপহরণ করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে গ্রামের একটি চক্র। মুক্তিপণ না দেওয়ায় চার দিন পর বাড়ির অদূরে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শিশুর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই সদর থানার পুলিশ শিশু অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আবু মিয়াসহ (৩৫) তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

কয়েক দিন আগে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে আবু মিয়ার জামিন হয়। পরে বাদীপক্ষ আপিল করলে উচ্চ আদালত তাঁর জামিন বাতিল করেন। এ নিয়ে আবু মিয়ার পক্ষের লোকজন বাদীপক্ষের লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হন। গতকাল সকালে আসামিপক্ষের সুমন মিয়া, তাঁর বড় ভাই কালু মিয়া ও চাচাতো ভাই শাকিল মিয়া বাদীপক্ষের নূর আলমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন।

এ ঘটনার জেরে গতকাল বিকেল চারটার দিকে বাদীপক্ষের লোকজন আসামিপক্ষের সুমন মিয়া ও কালু মিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। কিছুক্ষণ পর উভয় পক্ষের লোকজন দা-বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে গ্রামীণ সড়কে ও ফসলি জমিনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। বাদীপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন হোসেন মিয়া (৫৫) আর আসামিপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান (৫৮)।

গতকালের সংঘর্ষের ঘটনার জেরে আজ শনিবার সকাল থেকে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। বিকেলে উভয় পক্ষের লোকজন পুলিশের উপস্থিতিতেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক মহি উদ্দিন আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখনো এলাকাতেই (খাঁতিহাতা) আছি। এ ঘটনায় প্রথম যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তারা ঘটনার সঙ্গে আবু মিয়ার সম্পৃক্ততা আছে বলে স্বীকার করেছিল।’

মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি চার মাস আগে এ মামলার দায়িত্ব পেয়েছি। ওই শিশু হত্যার সঙ্গে আবু মিয়া জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন কিছুদিনের মধ্যে আদালতে পেশ করব।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওই গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।