পাবনায় ইনডোর ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইভিএম, প্রশিক্ষণ চলে কাদাপানিতে
দেশে চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর পাবনা জেলা ইনডোর ক্রিকেট নেট প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে (প্রশিক্ষণস্থল) ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) স্তূপ করে রাখা হয়। সেখানে ঢুকতে পারছেন না খেলোয়াড়েরা। ফলে বৃষ্টির দিনে পাশের স্টেডিয়ামে কাদাপানির মধ্যে তাঁদের প্রশিক্ষণ নিতে হচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ক্রিকেটাররা।
জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও স্থানীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলায় ক্রিকেটের মানোন্নয়নের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় শহরের শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামের পাশে একটি ইনডোর ক্রিকেট নেট প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড নির্মাণ করে। ২০০২ সালে নির্মিত গ্রাউন্ডটি দেখভালের দায়িত্বে আছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। বৃষ্টি ও অন্যান্য দুর্যোগের সময় ক্রিকেটাররা গ্রাউন্ডটিতে প্রশিক্ষণ নিতেন। গত ৫ জুন চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর গ্রাউন্ডটিতে ২ হাজার ৭০০টি ইভিএম রাখে নির্বাচন কমিশন। এর পর থেকেই সেখানে ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ বন্ধ হয়ে গেছে।
জেলা ক্রিকেট একাডেমির সাধারণ সম্পাদক ও ক্রিকেট প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ক্রিকেট গ্রাউন্ডটিতে তাঁদের একাডেমির ৪০ জন নারী-পুরুষ ক্রিকেটারসহ বিভিন্ন স্তরের ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। টানা বৃষ্টিতে স্টেডিয়ামের মাঠ পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। পিচ নষ্ট হয়ে আছে। তাই এখন কাদাপানির মধ্যে প্রশিক্ষণ দিতে হচ্ছে। এতে খেলোয়াড়দের খুব কষ্ট হচ্ছে। প্রশিক্ষণও ঠিকমতো হচ্ছে না।
দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, সামনে ক্রিকেটের মৌসুম শুরু হচ্ছে। বিভিন্ন লীগ শুরু হবে। এ মুহূর্তে খেলোয়াড়দের প্রস্তুত হওয়ার সময়। তাই দ্রুত ইনডোর থেকে ইভিএমগুলো সরানোর দাবি জানাচ্ছেন।
জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার নূর আহম্মেদ খান বলেন, কাদাপানির জন্য মাঠে অনুশীলন করতে তাঁদের খুব সমস্যা হচ্ছে। বলগুলো নষ্ট হচ্ছে। সামনের মাসে ঢাকা ক্রিকেট লিগ শুরু হবে। এখন অনুশীলন করা জরুরি। তাই তাঁরা ইনডোরটি আগের অবস্থায় চান। সঞ্জয় সাহা নামের অপর এক ক্রিকেটার বলেন, ‘এত সুন্দর একটি ইনডোর প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড থাকতে কাদাপানিতে প্র্যাকটিস খুবই কষ্টকর। আমরা দ্রুত ইভিএম সরানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।’
আজ সোমবার দুপুরে সরেজমিনে স্টেডিয়াম ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়ের পাশেই বিশাল ইনডোর প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডের প্রধান ফটকে তালা ঝুলে থাকতে দেখা যায়। বাইরে থেকে ভেতরে থরে থরে সাজানো ইভিএমের বাক্স চোখে পড়ে। সেখানে কথা হয়, জেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিস সহকারী দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। ছবি তোলার জন্য তালা খুলতে বললে তিনি নিষেধ আছে বলে জানান।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক বলেন, কথা ছিল ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে মেশিনগুলো ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। এখন তিন মাসেও নেওয়া হচ্ছে না। এতে প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডের কার্পেট নষ্ট হচ্ছে। তাই দ্রুত ইভিএম সরানোর জন্য তাঁরা নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সাধারণত প্রতিটি নির্বাচনের আগে ঢাকা থেকে মেশিনগুলো পাঠানো হয়। আবার নির্বাচন শেষে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এবার বিলম্ব হচ্ছে। তবে নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করছেন, দ্রুতই মেশিনগুলো ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।