নদ–মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী গরুর হাট
সড়ক-মহাসড়কের পাশে গরুর হাট না বসানোর পৃথক নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় মন্ত্রণালয় বিভাগ।
ঢাকার রানাভোলা এলাকায় ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের পাশে ও তুরাগ নদের কিছু অংশ দখল করে চলছে অস্থায়ী পশুর হাটের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে হাটের প্রায় ৭০ ভাগ কাজ।
এতে তুরাগ নদে দখল-দূষণ, ঈদে মহাসড়কে যানজট, স্থানীয় ব্যক্তিদের চলাচলে বিড়ম্বনাসহ দেখা দিয়েছে ভোগান্তির আশঙ্কা। এরপরও হাটটির অনুমতি বা ইজারা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পানি আইন অনুযায়ী নদের সীমানা চিহ্নের ভেতর কোনো ধরনের স্থাপনা তৈরি, দখল বা নদ দূষণের সুযোগ নেই। পাশাপাশি ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে সড়ক-মহাসড়কের পাশে গরুর হাট না বসানোর পৃথক নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় মন্ত্রণালয় বিভাগ। কিন্তু তারপরও চলছে হাট বসানোর কাজ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার প্রথম ধাপে ডিএনসিসি এলাকায় মোট ছয়টি হাট ইজারা দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি স্থায়ী, পাঁচটি অস্থায়ী। পরে আরও তিনটি হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে ৬ জুন উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের রানাভোলা এলাকায় (তুরাগ নদের পাড় ও মহাসড়কের পাশে) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের খালি জায়গায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৮০ লাখ টাকা। গতকাল সোমবার হাটের ইজারা পান মামুন বাচ্চু নামের এক ব্যক্তি।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর কামারপাড়া মোড়ের পাশেই রানাভোলা এলাকা। এখানে সোজা বয়ে গেছে ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়ক। মহাসড়কের পাশেই (কয়েক কদম সামনে) একটু নিচু জায়গায় কয়েক বিঘা ফাঁকা জায়গা। ফাঁকা জায়গাটির পাশেই তুরাগ নদ। মূলত নদ ও মহাসড়কের মাঝখানের এই ফাঁকা জায়গাটিই নির্ধারণ করা হয়েছে হাটের জন্য।
জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কাছে যেভাবে ফাইল এসেছে, আমি ওভাবেই সাইন করেছি। নিশ্চয়ই তাঁরা (ফাইল প্রস্তুতকারী) দেখেশুনেই ফাইল করেছেন। ভোগান্তির বিষয়ে আমাকে কেউ চিঠি দেননি।’
দরপত্র বাক্স খোলার আগেই ৭০ ভাগ কাজ শেষ
হাটটির দরপত্র আহ্বান করা হয় ৬ জুন। প্রথম পর্যায়ের দরপত্র বিক্রির শেষ দিন ছিল ৯ জুন। দরপত্র জমা ও দরপত্র বাক্স খোলার সময় ছিল গতকাল। এর আগেই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে হাটের প্রস্তুতির কাজ শুরু করে একটি পক্ষ।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, হাট উপলক্ষে এরই মধ্যে পুরো জায়গায় পোঁতা হয়েছে বাঁশের খুঁটি। গরু বাঁধার জন্য তৈরি করা হয়েছে বাঁশের বেড়া। বিভিন্ন অংশে বালু ও মাটি ফেলে চলছে সমতল করার কাজ। স্থাপন করা হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি ও হাসিল আদায়ের শেড। মহাসড়ক ঘেঁষে নির্মাণ করা দুটি বিশাল তোরণ। করা হয়েছে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা। হাট ঘিরেই অবস্থান করছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাটের দায়িত্বে থাকা একজন বলেন, ‘আমরা ৬ জুন থেকেই একটু একটু করে হাটের কাজ শুরু করেছি। এখন আমাদের পুরোদমে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। কাল-পরশু থেকে হাটে গরু আসা শুরু করবে’।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাটের ইজারাদার মো. মামুন বাচ্চু বলেন, ‘আমরা হাট প্রস্তুত করছিলাম। যদি অন্য কেউ পেত, তবে নির্মাণ খরচ নিয়ে ছেড়ে দিতাম।’ নিয়ম অনুযায়ী ইজারা পাওয়ার আগে হাট প্রস্তুত করা যায় কি না, জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।