অ্যাপস তৈরি করে অনলাইনে জুয়া, কুড়িগ্রামে মূল হোতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার
অ্যাপস তৈরি করে অনলাইনে জুয়ার মাধ্যমে মানুষের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রংপুর, কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুরে অভিযান চালিয়ে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এঁদের একজন চক্রটির মূল হোতা ও অ্যাপস ডেভেলপার মো. সুজন মিয়া (২৪)। তাঁর বাড়ি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে। বাকি দুজন হলেন আবুল কালাম (২২) ও ভবানী রায়—এই দুজন চক্রটির এজেন্ট। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনসের ফোর্সেস মেস সম্মেলনকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম। তবে তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র কয়েকটি জুয়ার অ্যাপস তৈরি করে তরুণদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে জুয়া খেলায় উদ্ধুদ্ধ করে আসছে। চক্রটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ার টাকার অবৈধ লেনদেন করে আসছিল। উত্তরবঙ্গের উঠতি বয়সী শত শত তরুণের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা তারা হাতিয়ে নিয়েছে। মূলত বিভিন্ন খেলাধুলা নিয়ে বাজি (বেটিং) ধরার মাধ্যমে এই জুয়া চলছিল।
অনলাইন মনিটরিং এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, প্রতারক চক্রের একটি দল রংপুরের মুলাটোল এলাকায় অবস্থান করছে। পরে গতকাল দিবাগত রাতে রংপুর শহরের সেনপাড়ার মুলাটোল প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন অয়ন ছাত্রাবাস থেকে অনলাইন জুয়ার এজেন্ট আবুল কালামকে (২২) আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, আবুল কালামের কাছ থেকে অনলাইন জুয়া খেলায় ব্যবহৃত ৩টি সচল মুঠোফোন, ১টি ৩২ জিবি মেমোরি কার্ড, ৬টি সিম কার্ড এবং নগদ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। কালামের দেওয়া তথ্য থেকে অনলাইন জুয়ার অ্যাপস ডেভলপার মো. সুজন মিয়াকে (২৪) ভূরুঙ্গামারী থানা–পুলিশের সহায়তায় আটক করা হয়। সুজনের কাছে থাকা জুয়ার অ্যাপস তৈরির কাজে ব্যবহৃত ১টি ল্যাপটপ, ২টি মুঠোফোন, ৩টি সিম কার্ড ও নগদ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলার পর সুজন মিয়া ও আবুল কালামের তথ্যের ভিত্তিতে ভবানী রায়কে দিনাজপুরের খানসামা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী থানার একটি টিম।
পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের শত শত তরুণের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জুয়ার অ্যাপস ডেভেলপার মো. সুজন মিয়াকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ তাঁর মাধ্যেমে উত্তরবঙ্গের অনলাইন জুয়ার সব এজেন্ট ও খেলোয়াড়দের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা করছে। খুব দ্রুত এসব অবৈধ অনলাইন জুয়া চক্রের সব সদস্যকে আইনের আওতায় আনা হবে।