দ্বিতীয় দিনের মতো উপাচার্য, সহ-উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সদস্যরা উপাচর্যের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। প্রশাসনিক ভবনের দোতলায়
ছবি: প্রথম আলো

আপগ্রেডেশন ও এ-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের দাবিতে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছেন। সোমবার সকালে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম যথারীতি চালু ছিল। বেলা একটা পর্যন্ত তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষক সমিতি এ অবস্থা নিরসনে পাঁচ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। দুদিন পার হলেও কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে জানান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়া।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবনের দোতলায় ১৫-২০ জন শিক্ষক বসে আছেন। উপাচার্যের এ কিউ এম মাহবুবের দপ্তরের দরজায় তালা ঝুলছে। সহ-উপাচার্য সৈয়দ সামসুল আলমের কক্ষেও তালা। সহ-উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীর কক্ষ খোলা।

আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষক (একজন অধ্যাপক, ৭০ জন সহযোগী অধ্যাপক এবং দুই শতাধিক সহকারী অধ্যাপক) আপগ্রেডেশন পেয়েছেন। তাঁদের বিষয়টি ২৯ মে ৩৯তম রিজেন্ট বোর্ডে পাস হওয়ার কথা। কিন্তু রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বিষয়টিই উত্থাপন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ।

এদিকে আপগ্রেডেশনের পর শিক্ষকেরা যে পদ পাবেন, বর্তমানে ওই পদের বিপরীতে অন্য শিক্ষক আছেন; অর্থাৎ পদটি আপাতত শূন্য নয়। এ অবস্থায় নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বা নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে একই আপগ্রেডেশন পুনরায় করা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এ কারণে বর্তমানে প্রায় ৩০ জন শিক্ষকের আপগ্রেডেশন বন্ধ রয়েছে। এসব জটিলতা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকেরা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের কার্যালয়ের দরজা খুলবেন না বলে জানিয়েছেন।

ফায়েকুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সমস্যা নিরসনে আমরা পাঁচ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে দুদিন চলে গেছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো অগ্রগতি নেই। উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাঁরা রিজেন্ট বোর্ডে কেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়টি উত্থাপন করেননি, তা আমাদের অজানা। আমরা উপাচার্যের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, রিজেন্ট বোর্ডে কী বিষয় তিনি উত্থাপন করেছিলেন, তার একটা অনুলিপি আমাদের দেওয়ার জন্য; কিন্তু তিনি আমাদের তা-ও দেননি। আজ আমরা উপাচার্যের ভবনে যাব, আমাদের বিষয়ে অগ্রগতির কথা জানতে চাইব। যদি সদুত্তর না দিতে পারেন, তাহলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মো. দলিলুর রহমান বলেন, আপগ্রেডেশনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে আন্দোলন করছেন, তা যৌক্তিক। ৩৯তম রিজেন্ট বোর্ডসভায় তাঁদের বিষয় উত্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু রিজেন্ট বোর্ডে তা অনুমোদন হয়নি। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিয়েছে রিজেন্ট বোর্ড। কমিটিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও আছেন। কমিটি এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেবে এবং পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ডসভায় পুনরায় বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।