শীতেও সড়কে হাঁটুপানি, সীমাহীন ভোগান্তি

সড়কটির একটি মাথা গিয়ে মিশেছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের সঙ্গে; অপর মাথা মিশেছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সঙ্গে।

সড়কে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে চলাচল করতে হয় পথচারী ও যানবাহনকে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা রেলস্টেশন রোড এলাকায়ছবি: দিনার মাহমুদ

শীতে আবহাওয়া এমনিতেই শুষ্ক। এই সময়ে সড়কে যানবাহন চলাচলের সময় অন্য সময়ের চেয়ে ধুলাবালু বেশি ওড়ে। কিন্তু ব্যতিক্রম চিত্র
নারায়ণগঞ্জ সদরের ফতুল্লার তক্কার মাঠ টু পোস্ট অফিস সড়কে। এই সড়কের রেলস্টেশন উকিলপাড়া অংশ এই শীতেও হাঁটুপানিতে তলিয়ে আছে। এতে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বছরখানেক ধরে এ সমস্যা চললে সমাধানে এগিয়ে আসছেন না কেউ।

গত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, তক্কার মাঠ এলাকা থেকে ফতুল্লা পোস্ট অফিস সড়কের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। এই সড়কের একটি মাথা গিয়ে মিশেছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের সঙ্গে; অপর মাথা মিশেছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সঙ্গে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির ফতুল্লা স্টেশন এলাকার উকিলপাড়া অংশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে।

এই সড়কের আশপাশের বাসিন্দাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কে পানি থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার শিক্ষার্থীসহ পাঁচ থেকে সাত হাজার বাসিন্দার। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে মালবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কারসহ শত শত যানবাহন। বর্ষা এলে জলাবদ্ধতার পানি বাড়িঘর ও দোকানপাটের ভেতরে ঢুকে যায়।

রনি আহমেদ নামের ওই এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় বছরজুড়ে সড়ক পানিতে তলিয়ে থাকছে। এ কারণে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রেতা কমে গেছে।

ফতুল্লা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৮০০। এসব শিক্ষার্থীর তিন ভাগের এক ভাগ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। বিদ্যালয়টির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জোবায়ের আলম বলেন, ‘শীতে পচা পানি মাড়িয়ে স্কুলে আসতে মন চায় না। জুতা পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। অটোরিকশা আসতে ভাড়া বেশি লাগে।’

সড়কটির এমন অবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক ভুগতে হচ্ছে বলে জানান বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান চান তিনি।

সড়কটি ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। ওই সড়কে পানি জমে ভোগান্তির বিষয়টি স্বীকার করেছেন ওই ওয়ার্ডের সদস্য হাসমত আলী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, রেলের ডাবল লাইন কাজের কারণে খালের অংশ বন্ধ হয়ে গেছে। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এই কারণে পানি সরতে পারছে না। পানিনিষ্কাশনের কয়েক দফা চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

জোড়াপুল এলাকার বাসিন্দা অটোরিকশাচালক মো. মৃদুল জানান, পানিতে চলার সময় অটোরিকশার চাকা পুরো ডুবে যায়। প্রায়ই যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। অনেক সময় মোটরে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে যায়।

ভোগান্তির বিষয়টি নজরে আনা হলে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেদারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থার সমস্যার কারণে সড়কটি পানিতে তলিয়ে আছে। দ্রুত ভোগান্তি নিরসনে সড়কের পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থার সমস্যা নিরসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।