ছোট্ট রাহিমের সারাক্ষণই এখন কাটে বিছানায়

আব্দুর রাহিম
ছবি সংগৃহীত

ছোট্ট শিশু আবদুর রাহিমের জন্ম ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট। বর্ণিল এ পৃথিবীর আলো-বাতাসে নিজের চঞ্চল অধিকার দাবি করার সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে তার আগমন। সমবয়সী অন্য সব শিশুর সঙ্গে হেসেখেলে আর দস্যিপনা করেই বেড়ে ওঠার কথা রাহিমের। অথচ সে শুয়ে থাকে হাসপাতালের বিবর্ণ বিছানায়। শীর্ণ শরীরজুড়ে চলে নানান দুর্বোধ্য সব যন্ত্রের আনাগোনা। ছোট্ট রাহিমের রক্তে বাসা বেঁধেছে ক্যানসার নামক মরণব্যাধি।

কুমিল্লা সদর উপজেলার অশোকতলা রেলগেট এলাকার বাসিন্দা রাহিমের মা হাবিবা আক্তার এবং বাবা ইব্রাহিম খলিল। ২০১৬ সালে এ দম্পতির বিয়ে হয়। কয়েক বছর ধরে বিদেশে যাওয়ার জন্য টাকা জমাচ্ছিলেন ইব্রাহিম খলিল। স্ত্রী–সন্তান নিয়ে একটা সুখী পরিবার। একটু সচ্ছলতার স্বপ্ন হাতছানি দিচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু একমাত্র সন্তানের দূরারোগ্য ব্যাধির খবর সবকিছু যেন নিমেষেই ওলট–পালট করে দিল।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রাহিম
ছবি সংগৃহীত

রাহিমের মা হাবিবা আক্তার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স। তাঁর একার আয়েই চলে পুরো সংসার। তিনি জানান, ‘অনেক দিন ধরেই বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ত রাহিম। একবার জ্বর হলে আর ভালোই হতে চাইত না। সারাক্ষণ ব্যথা ব্যথা বলে কান্নাকাটি করত। শহরের কোনো ডাক্তার আমার বাচ্চাটার অসুখ ধরতে পারেননি। চলতি বছর জুনের দিকে আমরা ওকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাই। সেখানে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ল্যাবএইড হাসপাতালের ডাক্তার আমার ছেলের অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকোমিয়ার কথা জানান। পুরোপুরি সুস্থ হতে তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। কিন্তু অনেক টাকার দরকার। কীভাবে কী করব, বুঝে উঠতে পারছি না আমরা।’

আব্দুর রাহিম
ছবি সংগৃহীত

ক্যানসার শনাক্ত হওয়ার পর ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রাহিমের দুটি কেমো দেওয়া হয়। পরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাহিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিল্লির একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক জানান, যত দ্রুত সম্ভব রাহিমের বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে হবে। তার বাবা ইব্রাহিম খলিল বলেন, এখন পর্যন্ত ছেলের চিকিৎসায় প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিদেশে যাওয়ার জন্য জমানো টাকার সবটাই চিকিৎসার পেছনে চলে গেছে। তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের অনেকেই সাহায্য করেছেন। কিন্তু বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকার দরকার। এমন বিপুল খরচ তাঁদের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। সমাজের বিত্তশালী ও হৃদয়বান মানুষেরা যদি তাঁর সন্তানের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন, তাহলে রাহিম হয়তো আবার প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠবে।

ছোট্ট রাহিম যেন অর্থের কাছে হেরে না যায়, সে যেন আবার সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারে, সে জন্য তার মা-বাবা ও স্বজনেরা সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন প্রথম আলোর পাঠকদের কাছে।

সাহায্যে পাঠানোর ঠিকানা—ইব্রাহিম খলিল-০১৯৪১৬৫৯৭৭৭ বিকাশ-নগদ (পারসোনাল), কুমিল্লা সোনালী ব্যাংক হিসাব নম্বর_১৩০৯৪০১০৩৮৬৩৫ হাবিবা আক্তার।