শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার আসামি সাত্তারের মৃত্যু
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার তিনটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবদুস সাত্তার (৫৮) মারা গেছেন। হঠাৎ তিনি অসুস্থ হলে রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
সাত্তারের মৃত্যুর বিষয়টি সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের সুপারিনটেনডেন্ট আবুল বাশার নিশ্চিত করেছেন।
আবুল বাশার জানান, সাত্তার ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার আসামি হিসেবে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে ছিলেন। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার পৃথক তিনটি মামলায় সাত্তারের তিন বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়। রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিনি শ্বাসকষ্টজনিত রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে কারাগারের হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দ্রুত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
সাত্তার কলারোয়া উপজেলার কয়লা ইউনিয়নের কয়লা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম আবদুল লতিফ। তিনি কয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও কয়লা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ছিলেন।
সাতক্ষীরা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি ফাইমুল হক বলেন, শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনের দুটি ও হামলার অপর একটি মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। মামলায় আরও ৪৪ আসামিকে সাত বছর ও সাড়ে তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই তিন মামলায় সাত্তারের সাড়ে তিন বছর কারাদণ্ড হয়। ৫০ জন আসামির মধ্যে সাত্তারের আগে আরও তিনজন আসামি কারাগারে মারা গেছেন। সাজাপ্রাপ্ত ৪৬ জনের মধ্যে বর্তমানে ৩৮ জন কারাগারে আছেন। বাকি আটজন পলাতক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণের শিকার এক নারীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে তাঁর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি এবং বোমা বিস্ফোরণ করা হয়। অল্পের জন্য বেঁচে যান শেখ হাসিনা। বহরে থাকা ১৫–২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে থাকা ১২ নেতা-কর্মী আহত হন। হামলায় সাতক্ষীরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম ও তাঁর নেতা-কর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ। ঘটনার ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন।