কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারিত ক্যাম্পাসের একটি নির্মাণাধীন হলের নামকরণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’ এবং শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে নাম রাখা হয়েছে ‘সুনীতি-শান্তি হল’।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার।
রেজিস্ট্রার মজিবুর রহমান মজুমদার জানান, শিক্ষার্থীরা এই দুটি হলের নাম পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেছিলেন। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে হল দুটির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় ১০১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর নতুন ক্যাম্পাসের ছাত্র হল-১-এর নামকরণ করা হয়েছে জুলাই আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র শহীদ আবদুল কাইয়ুমের নামে ‘শহীদ আবদুল কাইয়ুম হল’।
নিহত আবদুল কাইয়ুম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি সাভারের সিআরপি হাসপাতালের পাশের টগরমুড়া এলাকার বাসিন্দা। ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে যোগদানের উদ্দেশ্যে বের হলে সাভারে নিউমার্কেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট থেকেই দুটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। আবাসিক হলগুলো থেকে ইতিমধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার নামও মুছে ফেলেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে ১০ নভেম্বর বর্তমান সুনীতি-শান্তি হল থেকে শেখ হাসিনার ম্যুরালও সরানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারা দেশে অসংখ্য শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছেন। তাঁদের ত্যাগে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। এমন একজন স্বৈরাচারের নামে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল হতে পারে না। এ জন্য তাঁরা শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘সুনীতি-শান্তি হল’ নামকরণ করার জন্য আবেদন করেন। সুনীতি ও শান্তি এই দুজন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে তাঁদের সম্মাননা জানাতে তেমন কিছু করা হয়নি। তাই এই হলের নামকরণ সুনীতি ও শান্তির নামে করে তাঁদের সম্মানিত করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। আর ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’ করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।