ছাত্রলীগের কর্মীদের বিরুদ্ধে ১১ চাকরিপ্রার্থীকে আটকে রাখার অভিযোগ

যশোর জেলার মানচিত্র

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে অন্তত ১১ জন প্রার্থী নাজেহাল হয়েছেন। ওই চাকরিপ্রার্থীদের শহীদ মসিয়ূর রহমান ছাত্র হলের তৃতীয় তলায় অন্তত পাঁচ ঘণ্টা ছাত্রলীগের কর্মীরা আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । আজ বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ওই চাকরিপ্রার্থীদের আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি লিফট অপারেটরের ১২টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবেদনপত্র যাচাই–বাছাই শেষে ৩৮ প্রার্থীকে পরীক্ষার জন্যে আজ ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। সকাল ১০টা থেকে চাকরিপ্রার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে থাকেন। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তাঁদের ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে খবর আসে প্রার্থীদের মধ্যে ১১ জনকে ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাসে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ ক্যাম্পাসে পৌঁছালে বিকেলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আটকে রাখা প্রার্থীদের আবার পরীক্ষা নেওয়া হয়।

আটকে রাখা প্রার্থী মেহেদী হাসানের সঙ্গে  সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আটকে রাখা হয়েছিল। এখন পরীক্ষা দিচ্ছি। পরে কথা বললে ভালো হয়।’

আরেক প্রার্থী তাজউদ্দীন বলেন, ‘আমি কুষ্টিয়া থেকে পরীক্ষা দিতে সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে পৌঁছালে আমার প্রবেশপত্র নিয়ে কয়েকজন আমাকে ছাত্র হলের ৩০৪ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। এরপর একে একে সেখানে সাত প্রার্থীকে নেওয়া হয়। পাশের কক্ষেও প্রার্থীদের আটকে রাখা হয়। সেখানে বলতে শুনি, জীবন বড় নাকি চাকরি বড়। এরপর বিকেল পৌনে চারটায় আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চাকরির পরীক্ষা দিতে এলে ১১ প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার লোকজন আটকে রাখে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাত্র হলের যে কক্ষগুলোতে প্রার্থীদের আটকে রাখা হয়, সেসব কক্ষে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা থাকে। ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকা হলে বিকেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অপহরণ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’


অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘আমি বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি। আমার কোনো লোকজন কাউকে আটকে রাখেনি। যেসব কক্ষের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আমার প্রতিপক্ষের এক নেতার অনুসারীরা থাকে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খবর পেয়ে আমি নিজেই ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। যাদেরকে আটকে রাখা হয়েছিল, এমন চার প্রার্থীকে উপাচার্যের কক্ষে দেখেছি। তাদেরকে কে কারা আটকে রেখেছিল, তা তারা বলতে পারিনি। এ বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’