ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখে অভিভূত সুইডিশ পর্যটকেরা
ভারতীয় প্রমোদতরি ‘গঙ্গা বিলাস’–এ চড়ে বাংলাদেশে আসা সুইডিশ, জার্মান ও ভারতীয় পর্যটকেরা বিশ্ব ঐতিহ্য বাগেরহাটের ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন করেছেন।
আজ শনিবার বিকেলে মোংলা থেকে সড়কপথে ষাটগম্বুজ মসজিদে আসেন তাঁরা। ষাটগম্বুজ মসজিদের স্থাপত্যশৈলী দেখে অভিভূত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই পর্যটকেরা।
এ দলে সুইডেনের ২৮, জার্মানির ১ জন ও ভারতের ১ জন পর্যটক রয়েছেন। আজ দুপুরে বিশ্বের দীর্ঘযাত্রার প্রমোদতরি ‘গঙ্গা বিলাস’ মোংলা সমুদ্রবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে মোংলা বন্দরের পক্ষ থেকে অভ্যর্থনা জানানো হয় তাঁদের। বন্দরের আতিথেয়তা, আনুষ্ঠানিকতা ও দুপুরের খাবার শেষে সড়কপথে তাঁরা ষাটগম্বুজ মসজিদের উদ্দেশে রওনা দেন।
বিকেলে ষাটগম্বুজ মসজিদে পৌঁছানোর পর বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানসহ জেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা তাঁদের অভ্যর্থনা জানান। পরে ষাটগম্বুজ মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা হেলাল উদ্দিন অতিথিদের বাগেরহাট জাদুঘর ও ষাটগম্বুজ মসজিদ ঘুরিয়ে দেখান। এ সময় অতিথিদের কাছে ষাটগম্বুজ ও বাগেরহাটের ইতিহাস তুলে ধরা হয়।
অতিথিরাও মুসলিম স্থাপত্যের এই প্রাচীন নিদর্শন সম্পর্কে তাঁদের কৌতূহল জানতে নানা প্রশ্ন করেন। মসজিদের স্বতন্ত্র স্থাপত্যশৈলী ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব জেনে বিস্ময় প্রকাশ করে পর্যটক দলটি।
ষাটগম্বুজ মসজিদ ঘুরে দেখে এই পর্যটকেরা খুব আনন্দ পেয়েছেন জানিয়ে দলটির ট্যুর কোম্পানি ‘জার্নি প্লাস’-এর প্রধান নির্বাহী তৌফিক রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে লং ট্যুর রিভার ক্রুজ। এটি ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দেবে। বাংলাদেশ-ভারতের ২৭টি নদী ও ৫০টি পর্যটনকেন্দ্রে যাবে।
দলটি বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ভ্রমণ শেষে ১৭ ফেব্রুয়ারি কুড়িগ্রামের চিলমারী হয়ে ভারতের আসামে ঢুকবে জানিয়ে তৌফিক রহমান বলেন, প্রমোদতরিটি ১৩ জানুয়ারি ভারতের বেনারস রাজ্য থেকে ছেড়ে আসে। এটি ৫১ দিনের সফরে বের হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) অধীন বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছিল, যা এখনো কার্যকর। প্রটোকলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যাত্রী ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কোস্টাল এবং প্রটোকল রুটে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ ছাড়া সম্প্রতি মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হচ্ছে বলে মনে করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।