হিজড়া চেয়ারম্যান প্রার্থীর জাঁকজমক প্রচারণা 

আলী আজম ওরফে সাথী

গত সোমবার বিকেল পাঁচটা। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার নিশ্চিন্তা বাজারে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মধ্যে বাজারের চার মাথা মোড়ে ঢাকঢোল বাজাতে বাজাতে একটি পিকআপ ভ্যান এসে দাঁড়াল। পিকআপ ভ্যানের পেছনে দুটি ভটভটি। সেখান থেকে বের হয়ে আসলেন কয়েক হিজড়া। সড়কের মোড়ে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করলেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে থেকে একজন এসে দোকানে দোকানে গিয়ে পোস্টার বিলি করে ভোট চাইলেন।

তাঁর নাম সাথী। কাগজে-কলমে তাঁর নাম আলী আজম। তিনি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে একমাত্র হিজড়া চেয়ারম্যান প্রার্থী। তাঁর প্রতীক চশমা। ইউপি নির্বাচনে সাথীসহ পাঁচ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। অন্যরা হলেন আওয়ামী লীগের মো. বোরহান উদ্দিন ফকির (নৌকা), স্বতন্ত্র আবদুল বারিক মণ্ডল (আনারস), মো. খলিলুর রহমান (মোটরসাইকেল), মো. নাজমুল হক (ঘোড়া)। আগামী ২ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সাথীর নির্বাচনী প্রচারণায় উৎসুক লোকজনের সঙ্গে হিজড়ারাও থাকছেন। তাঁরা নেচেগেয়ে ভোট চাচ্ছেন। তাঁদের প্রচারণায় উৎসুক ভোটাররা মজাই পাচ্ছেন।

আলামিন হোসেন বলেন, অন্যদের চেয়ে তাঁর (সাথীর) নির্বাচনী প্রচারণা একটু আলাদা। নাচে–গানে জমজমাট এক পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে।

সাথীর ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ছয় ভাই, তিন বোন। সাথী আমাদের সবার বড়। তিনি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আমরা পরিবারের লোকজন, গ্রামবাসী ও হিজড়ারা তাঁর পক্ষে কাজ করছি।’

চেয়ারম্যান প্রার্থী সাথী বলেন, ‘আমি ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমার ঘর-সংসার নেই। কাজেই আমাকে দুর্নীতি করে টাকাপয়সা জমাতে হবে না। নির্বাচিত হলে সরকারি সব সুবিধা জনগণের মধ্যে সঠিকভাবে বণ্টন করব। বড়তারা ইউনিয়নবাসী আমার সঙ্গে আছেন।’

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিছার রহমান বলেন, আগামী ২ নভেম্বর ক্ষেতলাল উপজেলার তুলসীগঙ্গা ও বড়তারা ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।