দুই কিলোমিটারের বেশি লাইন নির্মাণ শেষ, জুনে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলবে: রেলপথমন্ত্রী

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজ পরিদর্শন করেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

আগামী জুনের মধ্য পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। আজ মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর রেললাইন নির্মাণকাজ পরিদর্শনে এসে তিনি জানান, ২০২৪ সালের মধ্যে ঢাকা-যশোর পথে রেল চলাচল করবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের কাজ শেষ হয়েছে ৮৮ শতাংশ।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় রেললিংক প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (সিআরইসি)।

রেললিংক প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙা ও ভাঙা থেকে যশোর। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভায়াডাক্ট ৪ কিলোমিটার আর মাটির ওপর দিয়ে ২৮ কিলোমিটার। ভায়াডাক্টের চার কিলোমিটার রেললাইন প্রস্তুত করা হয়েছে পাথরবিহীন। আর ২৮ কিলোমিটার নির্মাণ করা হয়েছে পাথর দিয়ে।

আরও পড়ুন

এখন পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশের রেলপথ নির্মাণকাজ চলছে। ইতিমধ্যে জাজিরা প্রান্তের ১ দশমিক ৫১ কিলোমিটার ও মাওয়া প্রান্তের দশমিক ৬০ কিলোমিটার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আগামী মার্চের-এপ্রিলের মধ্যে পুরো সেতুতে বসানো হবে রেল স্লিপার। জুনেই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করবে রেল, এমন প্রস্তুতি প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

আজ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে আসেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম। তিনি দুপুরে জাজিরা প্রান্তের পদ্মা স্টেশন থেকে সেতুর উপরিভাগের ভায়াডাক্টের চার কিলোমিটার ও সেতুর দেড় কিলোমিটার কাজ পরিদর্শনের জন্য রেল ট্রাককারে চড়ে রওনা হন। ১৫ মিনিটে মন্ত্রীকে বহনকারী ট্রাককারটি পদ্মা স্টেশন থেকে সেতুর দেড় কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়।

প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত উল্লেখ করে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। আমরা জুনের মধ্যেই ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পেরিয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল চালু করতে পারব। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ এগোচ্ছে। ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত পুরোনো লাইন আছে। এটা ফরিদপুর পর্যন্ত সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে অন্য প্রকল্পে পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেলসংযোগ নেওয়া হবে। তার ওপরে সমীক্ষা করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন

পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ বলেন, গত ২৩ নভেম্বর সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছিল। সেতুর উভয় প্রান্ত থেকেই কাজ শুরু করা হয়। কাজের যে গতি, তাতে মার্চ-এপ্রিলে সেতুর অংশের কাজ সম্পন্ন করা যাবে। স্টেশনগুলো প্রস্তুত হয়ে যাচ্ছে।